পেশাদারিত্ব- মানুষকে সাফল্য দেয়। আনন্দ দেয়। বেদনাও দেয়। দেয় কাঠিন্য। তবে সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব আরো বেশি কিছু দাবি করে। কোন কিছু দেখে কিংবা শুনে বিষ্মিত না হওয়ার কাঠিন্য তাকে রপ্ত করতে হয়। সেটা প্রেসবক্স থেকে কবরস্থান। সব জায়গায়। আবেগ তাড়িত হয়েছেন তো আপনার ফোকাস শিফট হয়ে যাবে। উইকেট নড়বড়ে হয়ে যাবে! কথাগুলো দেশি-বিদেশি অনেক সাংবাদিকের মুখে বহুবার শুনেছি। চেষ্টা করেছি সেই কাঠিন্য রপ্ত করতে; কিন্তু দাবি করতে পারছি না, সব সময় নিজেকে সেই কাঠিন্যের হেলমেটে মুখ ঢেকে রাখতে পেরেছি। কারণ, সাংবাদিক হলেও দিনশেষে তো মানুষ। আবেগ ছুঁয়ে যাবে না, তা কী করে হয়! ক্রিকেট প্রেসবক্সে তাই কাঠিন্যে মোড়ানো রোবটের মত থাকতে পারিনি। বাংলাদেশের ম্যাচ কাভার করতে গিয়ে কখনও আনন্দিত হয়েছি। কখনও হতাশ। কখনও উচ্ছ্বসিত। বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে, টেস্ট, টি-টোয়েন্টি জয় প্রেস বক্স থেকে দেখেছি। এটা ভাবতে এখনও আনন্দের অন্যরকম এক ঢেউ জাগে মনে! বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ, প্রথম ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি প্রেসবক্স থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়টাও। প্রেস বক্স থেকে বাংলাদেশের এতোগুলো ‘প্রথম’র সাক্ষী হতে পারায় নিজেকে একটু ভাগ্যবানই মনে হয়।সেই প্রথমগুলোর মধ্যে থেকে একটা প্রথমদিন চারেক আগে হঠাৎ অন্যরকমভাবে নাড়া দিয়ে গেলো। ’৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ। এডিনবরায় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ পেলো প্রথম জয়। কনকনে ঠান্ডা। প্রচন্ড বাতাস। হাত-পা হিম শীতল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। কারণ, মাঠে প্রেস বক্স মানে অস্থায়ী একটা তাঁবু; কিন্তু সেই ঠান্ডা বাতাসে শরীর যতোটা কাঁপছিল, তারচেয়ে বেশি হিমের স্রোত বয়ে যাচ্ছিলো শরীর দিয়ে যখন টপাটপ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ইনিংস! সেখান থেকে দলকে টেনে তুললেন এক ক্রিকেটার। যার দলভুক্ত নিয়ে কত নাটক করেছিল সেই সময়ের নির্বাচক কমিটি থেকে বোর্ড কর্মকর্তারা! বিকেএসপিতে প্র্যাকটিস ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পরও দেখা গেলো চৌদ্দজনের দলে তিনি নেই! মিডিয়া থেকে সাধারন মানুষ সবার মধ্যে তোলপাড়। সেটা খুব স্বাভাবিক। ফর্ম। অভিজ্ঞতা। সব কিছু মিলিয়ে তাকে দলের বাইরে রাখা কঠিন। তারপরও কেউ কেউ খোড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছিলেন, ফাস্ট বলে তার দুর্বলতা আছে। পারবে না। ফাস্ট বোলারদের সামনে কার যে দুর্বলতা নেই, সেটা সে সময়ের মতো এখনও বুঝে উঠতে পারি না। সানি গাভাস্কার থেকে ভিভ, লারা থেকে শচীন কেউ কী কখনো বলেছেন, ফাস্ট বোলিং-এর বিপক্ষে আমি সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি! কার্টলি অ্যাম্ব্রোসের আত্মজীবনীতে লেখা আছে, নেটে তিনি যখন লারাকে বারবার শর্ট পিচড বল করিছলেন, লারা বলেই ফেললেন, ‘আমাকে এতো শর্ট বল করছো কেন?’ ব্যাটসম্যানদের কাছে ফাস্ট বোলিং সব সময় এরকম অপছন্দের মেন্যু। সেটা ব্র্যাডম্যান থেকে গাভাস্কার। ভিভ থেকে লারা, টেন্ডুলকার সবার কাছে। বাদ যাবেন না কেউ। অথচ বাংলাদেশের এক সাবেক অধিনায়ক যাকে তার সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানের সার্টিফিকেট দিতেও অনেকে কার্পণ্য করেন না, সেই লোকটাকে বাদ দেয়া হয়েছিল প্রথম বিশ্বকাপ দল থেকে। অজুহাত পেস বল খেলতে পারেন না! পরবর্তিতে নির্বাচক কমিটি বিলুপ্ত করে সেই লোকটাকে বিশ্বকাপ দলে নিয়েছিলেন বিসিবি কর্মকর্তারা, বিশেষ জরুরী সভা ডেকে। তিনি ব্যাট হাতে নির্বাচকদের সেই উপেক্ষার জবাব দিয়েছিলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়ে ম্যান দ্য ম্যাচও তিনি। ওই লোকটার ব্যাটিং দেখে বিবিসির হয়ে কমেন্ট্রি করতে আসা ড্যানিশ অ্যামিশ একটা কথা বলেছিলেন, ‘চাপের মধ্যে অসাধারণ ইনিংস খেলে দিলো ছেলেটা। ওই ম্যাচটাকে স্কটল্যান্ডের কাছ থেকে বের করে নিয়ে গেল!’ড্যানিশ অ্যামিশ। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক। প্রথম বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে মুলতঃ তিনি স্কটিশ। তাই সেদিন স্কটল্যান্ডের হারে খানিকটা দুঃখ তিনিও হয়তো পেয়েছিলে। যতোটা আনন্দিত হয়েছিলাম আমরা। আমরা মানে বাংলাদেশের মানুষ। ওই ম্যাচ জেতার পর সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী, সেদিন মাঠেই বিসিবি সভাপতিকে মোবাইলে ধরেছিলেন। কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়কের সঙ্গে। অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গেও। অভিনন্দন জানিয়েছিলেন এবং সেটা খুব স্বাভাবিক ছিল। বাঙালির প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম জয়!সতের বছর আগের সেই খন্ড খন্ড স্মৃতি জড়ো হচ্ছিলো গেলো সপ্তাহে টেলিভিশনে জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাবে লোকেশ রাহুল নামের এক ভারতীয়র ব্যাটিং দেখে। না তার ব্যাটিং দেখে মুগ্ধতায় নয়। কারণ, ওর ব্যাটিং তো আগেও দেখেছি। সেটা টেস্টে। আইপিএলে। স্মৃতির সাগরে ডুব দেয়ার একটাই কারণ, যখন লোকটা রেকর্ড বইয়ে নাম লেখালেন।প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ওপেন করতে এসে অভিষেকে সেঞ্চুরিয়ানদের তালিকায় নাম লেখালেন। আর ওই তালিকায় প্রথম নামটা ড্যানিশ অ্যামিশ। ’৭২ সালে যিনি প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের হয়ে ওপেন করতে নেমেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। এরপ ডেসমন্ড হেইন্স থেকে মার্টিন গাপটিল অনেক নাম। তারমধ্যে ড্যানিশ অ্যামিশ এবং ফিল হিউজ দুটো নাম রেকর্ড বাইয়ে থাকলেও ক্রিকেট গ্রহে নেই। তারা সমাহিত। প্রথমজন অবশ্য জীবনের বাইশগজে ম্যান্ডেটরি ওভারেই আউট হয়ে গেছেন। দ্বিতীয়জন ‘ক্রিকেট শহীদ’! মাথায় হেলমেট থাকার পরও হিউজ বলের আঘাত পেয়েছিলেন। তারপর হাসপাতালেই শেষ তার জীবনের ইনিংস।বছর দু’য়েক আগে হিউজের মৃত্যু টেনে এনেছিল আরেকটা নাম। রামন লাম্বা। জীবন দিয়ে যাকে প্রমাণ করতে হয়েছে, তিনি ক্রিকেটার ছিলেন। দিল্লির এই ক্রিকেটার ভারতের হয়ে গোটা চারেক টেস্টও খেলেছিলেন। শ’খানেক রানও করেছিলেন। গোটা কয়েক ওয়ানডেও খেলেছিলেন। ডিডিসিএ ফিরোজ শাহ কোটলায় প্রাইড অফ দিল্লি বোর্ডে ওর নামটা বেশ যত্নে লিখে রেখেছে। ’৯৮-এর পর যতোবার ফিরোজ শাহ কোটলায় গিয়েছি, ততোবারই ওই নাম আর ছবিগুলোর দিকে চোখ আটকে গেছে। আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছি। এবার ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির সময়ও কোটলার প্রেস বক্সের আড্ডায় দ্য হিন্দু’র এক সময়ের ক্রিকেট রিপোর্টার বন্ধু বিজয় লোকপল্লীর সঙ্গে কত কথা রামনকে নিয়ে। হবে না কেন? লম্বা ভারতীয় হতে পারেন। অফিসিয়ালি তাই লেখা থাকবে; কিন্তু ও জীবন দিয়েই প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন, হয়তো কোন এক জনমে বাংলাদেশের ছিলেন! ভাড়াটে হিসেবে অনেকেই তো বাংলাদেশে, ঢাকার মাঠে ক্রিকেট খেলতে এসেছেন। আসছেন। হয়তো আগামীতেও আসবেন; কিন্তু রামন লাম্বা নামটার মত এতো আবেগে ভাসতে পারবে কেউ? সেটা অবশ্য যতোটা না আনন্দেও, তারচেয়ে অনেক বেশি বেদনার। বাঙালির ক্রিকেট প্রেমের ওপর বিয়োগান্ত এক ছাপ রেখে গেছেন ‘র্যাম্বো’ ইমেজের রামন! পৃথিবীর প্রথম আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটার। খেলতে খেলতে যার মৃত্যু। খেলাটা যতো দিন থাকবে, ইতিহাস ততোদিন রামন লাম্বাকে ধরে রাখবে। চাইলেই নামটা মুছে ফেলা যাবে না।লোকেশ রাহুল অভিষেকে সেঞ্চুরি করে ফিল হিউজকে মনে করিয়ে দিলেন। আর ফিল বারবার মনে করিয়ে দেন রামনকে। হিউজের মৃত্যু নিমিষে সারা পৃথিবী ছড়িয়ে পড়লো। শোকে মুহ্যমান হলো ক্রিকেট বিশ্ব। রামনের মৃত্যু সেতো পনের-ষোলো বছর আগের। তখনকার পৃথিবী অন্যরকম ছিল। প্রচারের এই জেট গতি চালু হয়নি; কিন্তু মৃত্যু তো মৃত্যু’ই। তার ভাষা এক। দু:খবোধও এক। লাম্বার মৃত্যুর সেই দু:খটা শুধু বয়ে বেড়াতে হয় তার পরিবারকে! রামন লম্বা, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে হয়তো পরিসংখ্যানের পাতায় কিছুই দিয়ে যাননি; কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে জীবনটাই দিয়ে গেছেন। ‘বাংলাদেশের বহু ক্রিকেটারকে, বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পেশাদারিত্ব কী। পেশাদার ক্রিকেটার হতে গেলে কি কি দরকার। লাম্বার কাছে ঋণগ্রস্ত থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেট’- বলছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক, আবাহনীর এক সময়ের কর্মকর্তা, ম্যানেজার আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। বিসিবির আরেক পরিচালক, আবাহনীর কর্মকর্তা, ৯৮-এ যিনি নিজেই রামন লাম্বাবে ফোন করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন লিগে খেলানোর জন্য। সেই জালাল ইউনুস সেদিন রামন লাম্বা প্রসঙ্গ উঠতেই আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েলন। হঠাৎ বিষাদাচ্ছন্ন জালাল বললেন, ‘ওর মা আমাকে ফোনে বলেছিলো, আমার ছেলেটাকে ফিরিয়ে দিতে পারলে না! কোন সান্তনা দিতে পারিনি ভদ্রমহিলাকে। আসলে কী বলবো বলেন! বলার-ই বা কি ছিল! লাম্বার মেয়েটা আমার মেয়ের বয়সী। আমার মেয়েটা দেখতে দেখতে বড় হয়ে গেলো। ওর মেয়েটা বাবাকে ছাড়াই বড় হচ্ছে! ভাবতে কষ্ট লাগে।’জালাল ইউনুসের কথা শুনতে শুনতে মনে হলো, তারপরও লাম্বাকে হারানোর দু:খটা সবচেয়ে বেশি ওর আইরিশ স্ত্রী কিম, আত্মীয়স্বজনদের। সেই দু:খটা সেদিন এই সাংবাদিকের মনেও উসকে দিলেন স্পোর্টস মেডিসিন অ্যাসোসিয়েশনের সেমিনারে ডাক্তার কনক কান্তি বড়–য়ার ‘হেড ইনজুরি’ নিয়ে প্রেজেন্টেশন। অনিবার্যভাবে চলে এলেন সেই রামন লম্বা। কারণ, এই বড়–য়াই ছিলেন রামন লাম্বার চিকিৎসক। তার কথা শুনতে শুনতে ফিরে গিয়েছিলাম ’৯৮-এর সেই উৎকন্ঠা নিয়ে কাটানো ষাট ঘন্টায়। লাম্বা পিজি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে। স্যাটেলাইটের টোয়েন্টি ফোর সেভেন জমানা তখনও শুরু হয়নি এদেশের সাংবাদিকতায়। ভরসা বলতে পত্রিকার পাতায় সবশেষ খবর। পেশাগত দায়িত্বে সেই সব শেষ খবর তাড়া করে বেড়াতে হয়েছিল পিজিতে। এক সময় সব শেষ খবর নয়। শেষ খবরই পেলাম। রামন লাম্বা ইতিহাস। হাজার মানুষের দীর্ঘশ্বাস!ক্রিকেট ইতিহাস লাম্বাকে কোথায় রাখবে জানি না। আগামী দিনের ক্রিকেট প্রেস হয়তো একদিন লিখবে এখনকার বাংলাদেশ হলে রামন লাম্বা ‘ক্রিকেট শহীদ’ হতেন না। চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হবে। ক্রিকেট মাঠে উন্নত ব্যবস্থা থাকবে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এসে মাঠ থেকে রামন লাম্বার মতো অবস্থা কারো হলে তাকে তুলে নিয়ে যাবে। তাদের পায়ে হেঁটে লাম্বার মতো ড্রেসিং রুমে যেতে হবে না, মাথায় ক্রিকেট বলের আঘাত পাওয়ার পরও। পড়ে থাকতে হবে না ধানমন্ডির কোন অখ্যাত ডেল্টা ক্লিনিকে! ওরকম সিরিয়াস অবস্থায়ও কোন ডাক্তার বলবেন না, বিপদ কেটে গেছে! কিন্তু তার আগ পর্যন্ত?রামন লাম্বা নামে কেউ একজন এদেশে ক্রিকেট খেলে গেছেন সেটাই মনে করা যাচ্ছে না! কে মনে রেখেছেন লাম্বাকে? যে ক্লাবের হয়ে লাম্বা ঢাকার লিগ খেলতে এসে শহীদ হলেন, তারা রেখেছেন? তার একটা ছবিও কী সেই ক্লাব রেখেছে? তার মুত্যুর দিনে কেউ কোন কথা বলেন! বলেন না। মাত্র সাতদিন আগে ঢাকা থেকে মেলবোর্নের ফ্লাইট ধরার সময় বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের এক সাবেক অধিনায়ক, মোবাইলে একটা কথা বলে গেলেন, ‘আপনার একটা লেখায় পড়লাম, ফুটবলার মুন্না ভাইয়ের মোনেম মুন্না হয়ে ওঠার পেছনে নাকি রামন লাম্বার একটা ভুমিকা ছিল। লাম্বাই নাকি তাকে প্রথম বলেছিলেন, বড় সকার প্লেয়ার হতে গেলে মাসল বিল্ড করতে হয়। জিম করতে হয়। তাই আবাহনী ক্লাবে মুন্নাকে নিয়ে তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা ফিটনেস প্র্যাকটিস করতেন। বলতেন, ফুটবল বডি কন্টাক গেম। শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করতে না পারলে এই খেলায় টিকতে পারবে না। তুমি রোজ আমার সঙ্গে ট্রেনিং করবে।’ বললাম হ্যাঁ, তাই। ওটা মোনেম মুন্না নিজেই বহুবার আমাকে বলেছিলেন। ‘আমি লাম্বার কাছে কৃতজ্ঞ। ওই আমাকে শিখিয়েছিল বডি কন্টাক গেমে পেশীর জোর লাগে। ওর সাথে প্র্যাকটিস করে আমি লাভবান হয়েছিলাম।’ মোবাইলে কথাগুলো শুনতে শুনতে তিনি আবার বললেন, ‘সেটা আমি নিজে আরও ভাল জানি। কারণ এক সময় আমি ফুটবল খেলতাম। শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কী হয় সেটা আমি টের পেয়েছি। ইনজুরিতে পড়ে ফুটবল ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে গেছে। পরে ক্রিকেটার হয়েছি। ক্রিকেটার হিসেবে কত স্মৃতি; কিন্তু একটা স্মৃতি প্রায় সময় ভুলে থাকতে চাই। রামন লাম্বা ক্যারিয়ারের শেষবার আমার বলে আউট হয়েছিল। খুব কম রান করেছিল। আমার নির্বিষ স্পিনে অ্যাক্রস খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছিল। যেটা মনে রাখতে চাই না।’আমিনুল ইসলাম বুলবুল মনে রাখতে চান না। আবার ভুলতেও পারেন না; কিন্তু বাকিরা যে ভুলেই গেছেন। ক’জন মনে রাখেন রামন লাম্বাকে? ক্রিকেট ইতিহাস তাকে মনে রাখবে মত্যুর ট্র্যাজেডির জন্য। চিকিৎসা শাস্ত্র তাকে ধরে রাখবে হেড ইনজুরি পড়ানোর জন্য; কিন্তু আবাহনী? যাদের হয়ে খেলতে এসে জীবনটাই দিয়ে দিলেন, তারা লাম্বার জন্য কী ধরে রাখলো?জাগো চ্যাম্পিয়নের চতুর্থ সংখ্যা পুরোটা পড়তে ক্লিক করুণ এই লিংকে...আইএইচএস/পিআর