নূপুর নূপুর তোমার দুপুর, কাটে এখন কেমন?আগে যেমন ছিলে তুমি এখনও কি তেমন?রাত পোহালেই বেড়িয়ে যেতে, পান-সুপারির বাগে।সবার আগে কুড়াতে সব মালিক জাগার আগে।বাদলা দিনে ওড়না মাথায় চলতে আমের বনে,সেসব কথা এখন কি আছে তোমার মনে?প্রতি সন্ধ্যায় পড়তে বসতে বই-খাতা সব খুলে।মাঠ পেরিয়ে একাই তুমি যেতে দূরের স্কুলে।ভালো ছাত্রী ছিলে নাকি শিক্ষকেরা তা-ই বলে।তোমার বান্ধবী নবনিতা তার কথাও কিছু বলো,আধপাগলা লোকের সাথে সে নাকি পালিয়েছিল?
নূপুর পরে পায়ে তুমি নিয়ে নূপুর নাম,ছেলে পিটিয়ে কুড়িয়েছিলে ছি ছি আর বদনাম,কেউ শোনেনি তোমার কথা মারার কি’বা কারণ,তাই তো বাবা রেগে করলো স্কুল যাওয়া বারণ।সেদিন থেকেই বন্দি হলে সন্ধি করে ঘর,স্কুল তোমায় ডাক দিলো না, বলল না তুই পড়।নূপুর তোমার বিয়ে না কোন গাঁয়ে হয়েছিল,তোমার সব উচ্ছ্বাস কি স্বামীই কেড়ে নিলো?মারামারি মান-অপমান এ সবকিছু সয়ে,দু’বছর নাকি টিকেছিলে ওই সংসারে গিয়ে।একদিন তাই স্বামীর হাত-পা ভেঙে দিয়ে,বাপের বাড়ি ফিরেছিলে একরাশ দুঃখ নিয়ে।এরপর এক বুড়োর সাথে বিয়ে করে ঠিক,তোমার বাবা মান-সম্মানের বাঁচালো সবদিক।সেই স্বামীটাও বাঁচেনি হায় এক বছরের বেশি।তার ছেলেরাও ফেরত দিলো দিয়ে লাথি-ঘুষি।
নূপুর তোমার পায়ের নূপুর এখনো কি বাজে,নাকি সেসব তুলে রেখেছো, নাকি সেসব বাজে।তোমার গানের গলা শুনে স্তব্ধ হতো লোক,মন্দীভূত হত যে হায় যত করুণ শোক।তোমার বলা পঙক্তিগুলো এখনো সবাই বলে,তোমার নাচের সাথে কি আর এখনো তুলনা চলে।গায়ে তোমার চর্চা হতো ভালো-মন্দ নিয়ে,সব কি ধুয়ে মুছে গেল তোমায় বিয়ে দিয়ে।
তোমার সাথে বলবো কথা আজকে সারারাত,আজকে তুমি বলবে আমায় তোমার মনের সাধ।চুপটি করে শুনবো সেসব এসেছি দূর হতে,আমায় তুমি বলো সেসব বসলাম মাদুর পেতে।আজকে তোমার হৃদয় বেদন উজাড় করো সব,রুক্ষমনের সূক্ষ্ম ব্যথা করুক না উৎসব।আজ কোনো কাজ নেই আমার, আজ ঘুমের ছুটি।তোমার দুঃখের কথা বলো, দুঃখ হোক আজ মাটি।
এসইউ/এএসএম