দিনভর কাজের পর মাথা এলোমেলো লাগে, ক্লান্তি থাকে চরমে। এমন সময় ঘরে ফিরে যদি একটা মৃদু আলো, বাতাসে ভেসে বেড়ানো মিষ্টি গন্ধ, আর সঙ্গে হালকা সুর পাওয়া যায়, কেমন লাগবে? হঠাৎ আপনার চেপে থাকা ঘাড় আর বিগড়ে থাকা মেজাজ শিথিল হতে শুরু করবে। এটাই অ্যারোমাথেরাপি — সুগন্ধির দিয়ে মনের চিকিৎসা।
সুগন্ধি কেন কাজ করে
গবেষণায় দেখা গেছে, ঘ্রাণ বা গন্ধ আমাদের মস্তিষ্কের ‘লিম্বিক সিস্টেমে’ প্রভাব ফেলে, যা আবেগ ও স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। যেমন ধরুন, রাস্তায় যেতে যেতে হঠাৎ হাস্নাহেনার গন্ধ নাকে আসলে কি কখনও ফিরে গিয়েছেন ছোটোবেলার লোডশেডিংয়ের সন্ধ্যায়?
যখন বছর শেষে স্কুলের ছুটিতে একদল নাতি-নাতনিকে নিয়ে আকাশ ভরা তারার নিচে উঠানে বসতো দাদি বা নানি। বাড়ির পেছন বা উঠানের এ কোন থেকে ভেসে আসত হাস্নাহেনা বা কামিনীর সুগন্ধ।
এমনই কিছু স্মৃতি, সেই স্মৃতির সঙ্গে জড়িত অনুভূতি আর ঘ্রাণ আমাদের মনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নেয়। সেইসব সুগন্ধি, সঙ্গে আরও কিছু সুগন্ধি উপকরণ দিয়েই করা সম্ভব অ্যারোমাথেরাপি।
আপনিও বাড়িতে নিজের পছন্দের সুগন্ধি মোমবাতি ব্যবহার করে নিজের মনের যত্ন নিতে পারেন। ল্যাভেন্ডার, জ্যাসমিন বা ক্যামোমিলের মতো গন্ধ মস্তিষ্কে প্রশান্তি এনে স্ট্রেস ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
আজ (১ নভেম্বর) সেন্টেড ক্যানডেল বা সুগন্ধি মোমবাতি দিবসে জেনে নিন কোন গন্ধ কখন ব্যবহার করবেন-
১. ল্যাভেন্ডার: মানসিক চাপ ও অনিদ্রা কমাতে সবচেয়ে কার্যকর।২. জেসমিন: মুড ভালো রাখে ও ক্লান্তি দূর করে।৩. ভ্যানিলা: উষ্ণ ও স্বস্তিদায়ক অনুভূতি দেয়, মন শান্ত রাখে।৪. সাইট্রাস: সতেজতা আনে, মনোযোগ বাড়ায়।
অ্যারোমাথেরাপি করার সহজ পদ্ধতিঘরের আলো মৃদু করে দিন, একটি সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালান, সঙ্গে হালকা ও নরম সুরের কোনো সংগীত চালান। কয়েক মিনিটেই দেখবেন মানসিক ভার হালকা লাগছে। রাতে ঘুমানোর আগে এই অভ্যাস শরীর ও মনকে বিশ্রামের জন্য প্রস্তুত করে।
তবে মোমবাতি সবসময় সমতল ও নিরাপদ জায়গায় রাখুন, বিশেষ করে শিশু বা পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে। দীর্ঘ সময় জ্বালিয়ে রাখবেন না, ঘর বন্ধ থাকলে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন।
একটু সুগন্ধি, একটু আলো, আর কয়েক মিনিটের নীরবতা—এই তিনেই লুকিয়ে আছে মন শান্ত রাখার সহজ উপায়।
সূত্র: হেলথলাইন, সাইকোলজি টুডে, আমেরিকান অ্যারোমাথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন
এএমপি/এএসএম