তথ্যপ্রযুক্তি

ব্ল্যাক ফ্রাইডে শপিং: অনলাইনে নিরাপদ থাকার ১১ উপায়

বছরের সবচেয়ে বড় সেল-ইভেন্টগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্ল্যাক ফ্রাইডে। এই সময়টাতে নানা ব্র্যান্ড, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও অনলাইন স্টোরগুলো চোখধাঁধানো ডিসকাউন্ট দেয়। আর ক্রেতার ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে অনলাইন মার্কেটপ্লেস। কিন্তু অফারের এই ভিড়ের মাঝেই বেড়ে যায় স্ক্যাম ও সাইবার প্রতারণার ঝুঁকি। অসতর্ক হলে কয়েক সেকেন্ডেই হারাতে পারেন অর্থ, ব্যক্তিগত তথ্য বা অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ। তাই অনলাইন শপিংয়ের আগে নিরাপত্তা মানা জরুরি।

১. অফার দেখলেই চট করে ক্লিক করবেন নাব্ল্যাক ফ্রাইডের সময় ‘৯০ শতাংশ ডিসকাউন্ট’, ‘ফ্রি গিফট’, ‘ফ্রি ডেলিভারি’ ইত্যাদি লোভনীয় অফার ভেসে আসে নানান ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। অনেক স্ক্যামার এই সময় ভুয়া সাইট খুলে ফেলে এবং প্রচুর বিজ্ঞাপন ছড়ায়। তাই কোনো অফার সন্দেহজনক ভালো লাগলে সেটি হয়তো সত্যিই ভালো নয়। পরিচিত, বিশ্বস্ত ও অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেই কেনাকাটা করুন।

২. ওয়েবসাইটের লিংক ভালো করে যাচাই করুনঅনেক প্রতারক আসল ব্র্যান্ডের মতোই দেখতে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে। শুধু ডোমেইনের নামেই থাকে সামান্য পার্থক্য। এসব সাইটে ঢুকলে আপনার তথ্য হাতিয়ে নেওয়া খুব সহজ। ব্রাউজারের ঠিকানায় https:// আছে কি না, তালার আইকন আছে কি না, তা সবসময় যাচাই করুন।

৩. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে লেনদেন করবেন নাশপিং মল, ক্যাফে বা রেস্টুরেন্টের পাবলিক ওয়াই-ফাই সাধারণত নিরাপদ নয়। সাইবার অপরাধীরা সহজেই ডাটা স্নিফিংয়ের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তাই লেনদেনের জন্য সবসময় নিজের মোবাইল ডেটা বা ভরসাযোগ্য হোম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন।

৪. ভার্চুয়াল ডেবিট কার্ড বা লিমিটেড-ব্যালেন্স কার্ড ব্যবহার করুনঅনলাইন কেনাকাটার জন্য মূল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা উচ্চ সীমার কার্ড ব্যবহার না করাই ভালো। তার বদলে ব্যবহার করুন ভার্চুয়াল ডেবিট কার্ড বা সীমিত ব্যালেন্সের কার্ড। এতে কার্ডের তথ্য চুরি হলেও বড় অঙ্কের ক্ষতি হবে না।

৫. থার্ড-পার্টি পেমেন্ট গেটওয়ে বেছে নিনযতটা সম্ভব ক্যাশ অন ডেলিভারি, বিকাশ/নগদ পে বা মাস্টারড সিকিউরকোড সেবা ব্যবহার করুন। নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতারণার সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দেয়।

৬. টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু রাখুননেটব্যাংকিং, ই-ওয়ালেট, ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া সব গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টে ২-ধাপ যাচাইকরণ সক্রিয় রাখলে ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। পাসওয়ার্ড ফাঁস হলেও অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেওয়া সহজ থাকবে না।

৭. ডেলিভারি চার্জ ও রিটার্ন পলিসি দেখে নিনব্ল্যাক ফ্রাইডের অফারে অনেক সময় ডেলিভারি চার্জ লুকানো থাকে বা ভুয়া রিটার্ন পলিসি দেখানো হয়। কেনার আগে আগাম ঠিক করে নিন পণ্য ফেরত দেওয়া যাবে কি না, কত দিনের মধ্যে করা যাবে, ডেলিভারি চার্জ কেমন।

৮. রিভিউ এবং রেটিং দেখার অভ্যাস গড়ুনঅতিরিক্ত সস্তায় বিক্রি করছে এমন অপরিচিত অনলাইন শপ এড়িয়ে চলুন। পণ্যের রিভিউ, রেটিং, বিক্রেতার প্রোফাইল, পূর্বের ক্রেতাদের মন্তব্য দেখে সিদ্ধান্ত নিন। রিভিউ না থাকলে পণ্যটি নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

৯. ইনবক্সে আসা সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে চলুনব্ল্যাক ফ্রাইডের সময় ই-মেইল, এসএমএস বা মেসেঞ্জারে অসংখ্য ভুয়া বার্তা আসে-‘কংগ্রাচুলেশনস! ইউ ওন অ্যা গিফট কার্ড!’, ‘গেট ৮০% ডিস্কাউন্ট অনলি ফর টুডে!’ এসব বার্তায় থাকা লিংক কখনোই ক্লিক করবেন না। এগুলো অনেকসময় ফিশিং লিংক হয়, যা ক্লিক করলেই আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।

১০. অর্ডার ট্র্যাকিং সবসময় অফিসিয়াল অ্যাপে দেখুনভুয়া ডেলিভারি নোটিফিকেশন বা ট্র্যাকিং লিংক পাঠিয়ে অনেক প্রতারক আপনার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। সবসময় অফিসিয়াল অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে অর্ডারের স্ট্যাটাস চেক করুন।

১১. নিজের ব্যাংক স্টেটমেন্ট নজরে রাখুনব্ল্যাক ফ্রাইডের কেনাকাটার পর কয়েকদিন নিজের ব্যাংক বা ওয়ালেট স্টেটমেন্ট দেখুন। অপরিচিত কোনো ট্রান্সেকশন চোখে পড়লে দ্রুত ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

আরও পড়ুনবিশ্বের সবচেয়ে ছোট ফোন, ওজন মাত্র ১৩ গ্রাম‘ফোকাস মোড’ আপনার মনোযোগ ধরে রাখার ডিজিটাল সহায়ক

কেএসকে/জেআইএম