দেশজুড়ে

পাবনায় সন্ত্রাসীদের হামলায় মাথা ফাটলো শিক্ষকের

পাবনার ফরিদপুরে প্রাথমিকের শিক্ষকদের আন্দোলন চলা অবস্থায় শিশু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে রাজীব বিশ্বাস নামের এক শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন। তার মাথা ফেটে গেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বনওয়ারীনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষকের নাম রাজীব বিশ্বাস। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে পরীক্ষা দিতে আসা শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের তাড়িয়ে দিচ্ছিলেন সহকারী শিক্ষকরা। এসময় প্রধান শিক্ষক আব্দুর রব বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস ও প্রশাসনকে জানানোর পর তাদের সহায়তায় প্রথম শিফটের পরীক্ষা নেন। এরপরে বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলার কয়েকশ শিক্ষক সেখানে উপস্থিত হন।

অভিযোগ রয়েছে, তাদের থামাতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ফোন করে জানান। পরে উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন ও জবাসহ বেশ কয়েকজন সেখানে শিক্ষকদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তারা সহকারী শিক্ষক রাজীব বিশ্বাসের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করেন।

আহত শিক্ষক রাজীব বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায়ে চলমান শাটডাউনে সব পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ছিল। সেই সিদ্ধান্ত না মেনে প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। আমরা সেখানে উপস্থিত হলে তিনি সন্ত্রাসী ডেকে এনে আমাদের মারধর করেন। আমার মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। অন্য শিক্ষকরা না থাকলে আমাকে মেরে ফেলতো।’

সন্ত্রাসীদের চেনেন কি-না এমন প্রশ্নে তিনি যুবদল নেতা নয়ন ও জবাকে চিনেছেন বলে জানান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রব বলেন, ‘আমি শিক্ষকদের দাবিকে সমর্থন করি। কিন্তু এসময় বাচ্চাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে আমি তা সমর্থন করি না। তাছাড়া আমি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা নিচ্ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম শিফট পরীক্ষা নেওয়ার পর দ্বিতীয় শিফটের বেলায় আমাকে তারা তালাবদ্ধ করে রাখে। তখন আমি ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি জানাই। যখন শিক্ষক রাজীব আহত হন তখন আমি রুমে তালাবদ্ধ। ওই শিক্ষককে কারা আঘাত করেছে আমি জানি না। আমি আমার ঊর্ধ্বতন অফিস ছাড়া কাউকেই জানাইনি।’

ফরিদপুর উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বলেন, ‘আমরা জানতে পারি সহকারী শিক্ষকরা শিশু শিক্ষার্থীদের রুমে আটকে রেখেছেন। বিষয়টি দেখতে গেলে সহকারী শিক্ষকরা আমাদের ওপর চড়াও হন। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থতির সৃষ্টি হয়। এছাড়া কিছুই নয়।’

ফরিদপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চলমান পরিস্থতি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিউল আযম বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলমগীর হোসাইন নাবিল/এসআর