আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েল সমর্থিত ‘দেশদ্রোহী’ আবু শাবাব নিহত

ইসরায়েল সমর্থিত গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘পপুলার ফোর্সেস’-এর নেতা ইয়াসের আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এ গোষ্ঠীটি। গাজায় হামাসের বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনী তাকে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অধিকাংশ ফিলিস্তিনির কাছে তিনি ছিলেন বিতর্কিত ও ‘দেশদ্রোহী’ হিসেবে পরিচিত।

দক্ষিণ গাজার বেদুইন তারাবিন গোত্রের সদস্য আবু শাবাবের বয়স ত্রিশের কোঠায়। ২০২৪ সালে ‘অ্যান্টি-টেরর সার্ভিস’ নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন শাবাব। পরে সেটির নাম বদলে হয় ‘পপুলার ফোর্সেস’। প্রায় ১০০ সদস্যের অস্ত্রসজ্জিত এই গোষ্ঠীটি মূলত ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রিত গাজা এলাকায় সক্রিয় ছিল।

গোষ্ঠীটি নিজেদের জাতীয়তাবাদী ফিলিস্তিনি শক্তি হিসেবে পরিচয় দিলেও অনেকের কাছে এটি ছিল অপরাধী চক্র ও ইসরায়েলি বাহিনীর সহযোগী। গাজার সাধারণ জনগণের সমর্থন তারা কখনোই পায়নি। এমনকি তার নিজ গোত্র থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তার মৃত্যু ‘গোত্রের ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি’।

আবু শাবাবের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে দ্বিধা ছিল। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, আদর্শ নয় বরং ক্ষমতাই ছিল তার প্রধান চালিকা শক্তি।

আবু শাবাবকে বহু ফিলিস্তিনি একজন অপরাধী হিসেবেই দেখতেন। যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত তিনি গাজায় মাদক-সম্পর্কিত অপরাধে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে ছিলেন। যুদ্ধের প্রথম দিকে তিনি কারামুক্ত হন।

পপুলার ফোর্সেস নিজেদেরকে মানবিক সহায়তা রক্ষা ও বিতরণে নিয়োজিত হিসেবে চিত্রিত করলেও তাদের বিরুদ্ধে ত্রাণ লুটপাটের অভিযোগ ওঠে। ওয়াশিংটন পোস্টের হাতে আসা জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে তাকে ব্যাপক ও পদ্ধতিগত লুটপাটের প্রধান দায়ী ব্যক্তি বলা হয়। গাজার নিরাপত্তা সূত্রও ইসরায়েলি-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর ত্রাণ লুটপাটে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

আবু শাবাব কীভাবে নিহত হলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার উত্থানের মতোই তার মৃত্যুকে ঘিরেও রহস্য রয়ে গেছে। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার যে,হামাসের বিকল্প নেতৃত্ব গড়ার ইসরায়েলি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

সূত্র : আল-জাজিরা

কেএম