টি-টোয়েন্টিতে চলতি বছরটা দারুণ কেটেছে বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ জয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ জয়। এশিয়া কাপে ফাইনালে না গেলেও তৃতীয় হয় টাইগাররা।
চলতি বছরের মার্চে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব পান লিটন, গেলো ৮ মাসে তার অধীনে ৫টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে এমন ধারবাহিকভাবে সাফল্য পাওয়ার রহস্য জানিয়েছেন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী সিনিয়র কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
আজ মিরপুরে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে আসলে আমাদের প্রোগ্রেসটা আমরা যেভাবে করতে চেয়েছি, হয়তো মোটামুটি কাছাকাছি পৌঁছেছি। একেবারে বলবো না যে, আমরা অনেক সাফল্য পেয়ে গেছি। তবে যতটুকু সাফল্য আসছে, এটা টি-টোয়েন্টি থেকেই আসছে। কারণ আমরা এটা রেগুলার সিরিজ খেলেছি একটা পর একটা এবং একটা প্ল্যান অনুযায়ী আমরা এগিয়েছি, ওয়ার্ল্ড কাপের প্ল্যান করে আমরা এগিয়েছি।’
‘এখনো হয়তো ইম্প্রুভমেন্টের আরো কিছু জায়গা আছে। তবে আমাদের যতগুলো সিরিজ ছিল, এখান থেকে হয়তো কিছু রেজাল্ট আসছে। ব্যাটাররাও তাদের রোল অনুযায়ী খেলতে পেরেছে। অনেক সময় হয়তো অনেক ব্যাটার তার রোলের রোল অনুযায়ী পারফর্ম করেনি। কিন্তু তারা এটলিস্ট জানে, আসলে তাদের কী করতে হবে। হয়তো পারফরম্যান্স আসছে, অনেক সময় আসেনি। তবে তাদের রোলটা তারা বুঝতে পেরেছে। আগামী দুইটা মাসে যদি তারা সেই জায়গায় কাজ করে তাহলে আমার মনে হয় যে, টি-টোয়েন্টি টিমটা একটা ভালো অবস্থায় থাকবে।’
এখন জাতীয় দলের অনুশীলনে ব্যাটাররা একে অপরের ব্যাটিংয়ের মান নিয়েও আলোচনা করেন। সালাউদ্দিন জানালেন, তারা চান টিম মিটিংয়ে যেন ক্রিকেটাররা নিজে থেকে কথা বলেন, ডিসিশন নেওয়া শুরু করেন।
জাতীয় দলের এই সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘টিম মিটিংয়ে ছেলেরা যেন একটু কথা বলে, তারাই যেন মিটিংটা চালায় এবং তারাই যেন ডিসিশন নেয়। কারণ দিনশেষে তারাই খেলবে, আমরা না। তারা যত ভালো ডিসিশন নিবে, তারা যত ম্যাচিউরড হবে, তাদের গেম সেন্স যত ভালো হবে, তত তারা ভালো এপ্লাই করতে পারবে। তো এটাও এক ধরনের মেথড যে আসলে কীভাবে নিজেরা নিজেদের কোচিং করাবে। একজন আরেকজনেরটা বলবে, টিমে টিমের ভিতরে কথা বলবে, টিমের স্ট্র্যাটেজিতে তারা কথা বলবে। এটা আমরা আসলে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছি। তারা যেন নিজেরাই লিডার হয়, নিজেরাই যেন রেসপনসিবল হয় এবং যেন নিজেদের কাজটা নিজেরাই করতে পারে। কারণ সবসময় কোচ আপনাকে খেলে দিবে না। তারাই যদি তাদের নিজেদের বেস্ট কোচ হয়, তখন আমার মনে হয় যে তারা আরো বেটার ক্রিকেট খেলবে।’
সেক্ষেত্রে টি-টোয়েন্টির সাম্প্রতিক সাফল্যে কী বাড়তি ভূমিকা রেখেছে? প্রশ্নে সালাউদ্দিন বলেন, ‘দেখুন আপনারা সবসময় বলেন যে, আমাদের পেস বোলিংটা অনেক ভালো। কারণ পেস বোলিংয়ে এখন আপনি যদি তাসকিনকে বলেন বা ফিজকে বলেন তারাই আসলে টিম মিটিংটা পরিচালনা করে এবং তারা জানে এই লেভেলে আসলে কী করতে হয়। তারা অনেকদিন ধরে খেলছে এবং তাদের সাথে যারা আছে তাদের কিন্তু তারাই গাইড করে। এটাই হচ্ছে আসলে একটা ভালো টিমের লক্ষণ।’
‘একটা প্লেয়ার আরেকটা প্লেয়ারকে সামনের দিকে আগানোর জন্য চেষ্টা করছে। তো ওই কালচারটা আমরা বিল্ড করার চেষ্টা করতেছি। বাইরে থেকে আপনার অনেক কিছু মনে করতে পারেন। বাট কালচারটা যত বিল্ড হবে, আমার মনে হয় এই ধরনের কালচারের জন্য একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে শেখানোর চেষ্টা করবে এবং নিজেদের এক্সপেরিয়েন্সটা শেয়ার করবে, তখন টিমটা অটোমেটিকলি কিন্তু ভালো হয়ে যাবে। এভাবেই আসলে আমাদের সবকিছুই করানো হচ্ছে, যেগুলা আনছি। তবে আমি যেটা বললাম যে, যখন প্লেয়াররা নিজেরাই বুঝতে পারবে যে প্রতিটা সিচুয়েশনে তার কী করতে হবে তখন টিমটা অটোমেটিকলি ভালো হওয়ার চান্স বেশি থাকবে।’
এসকেডি/এমএমআর/জেআইএম