বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) নীতিমালা রিভিউ করে পরিবর্তন আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই এনইআইআর নীতিমালা রিভিউ করা হবে। সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে এ নীতিমালা পরিবর্তন করা হবে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার অথবা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব নীতিমালা মুক্তবাজার অর্থনীতির পরিপন্থি, সেগুলো আমরা অবশ্যই রিভিউ করবো।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত হোটেল সারিনায় সেন্টার ফর টেকনোলোজি জার্নালিজম (সিটিজে) আয়োজিত ‘এনইআইআর: বাস্তবায়ন কাঠামো, জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক উদ্বেগ’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন আমীর খসরু।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, যে পণ্য সবার দরকার, সেটার দাম বেশি হতে হবে কেন? ৬৭ হাজার কোটি টাকা নাকি ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ করেছে, তার ফল কী? উৎপাদনের নামে স্থানীয়ভাবে যারা মোবাইল ফোন অ্যাসেম্বল করে সুযোগ নিচ্ছে, তারা কতটুকু ভ্যালু অ্যাড করছে? যারা ইনভেস্টমেন্ট করে ব্যবসা করছে, তারা প্রতিবছর ভ্যালু এডিশন করছে কি না, সেগুলো দেখতে হবে।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘দুই পক্ষের ট্যাক্সের পরিমাণ সামঞ্জস্য আছে কি না সেটাও দেখতে হবে। কোনো পলিসি সুনির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের জন্য তৈরি করা হলে ব্যবসা দাঁড়াতে পারে না। এভাবে মনোপলির সুযোগ দিলে তারা সব ব্যবসায়ীকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তারা অ্যাসেম্বেলিংয়ের নামে এমনিতেই ৫০ শতাংশ সুযোগ বেশি নিচ্ছে, সেখানে অন্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে একক নিয়ন্ত্রণ নিলে এর ফলাফল ভালো হবে না।’
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর টেকনোলোজি জার্নালিজমের (সিটিজে) সভাপতি ও দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক হাসান জাকির।
বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, যে কোনো নীতিমালা করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও জনগণের লাভ হচ্ছে কি না, সেটা সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। সে নীতিমালা সামগ্রিক স্বার্থে নাকি সুনির্দিষ্ট সিন্ডিকেটকে সুযোগ দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে, সেটাও দেখতে হবে। কারও পকেট ভারি করার জন্য নীতিমালা করা যাবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে যেখানে কর্মসংস্থান নেই, সেখানে এনইআইআর নীতিমালা করে; যারা কর্মসংস্থান করেছে, তাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করে; গণতান্ত্রিক পদ্ধতি না মেনে; একতরফা সিদ্ধান্ত আগের স্বৈরচারী সরকারকেও হার মানাচ্ছে। শেখ হাসিনার মতো পলিসি করা বিপজ্জনক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। অভ্যুত্থানের সামনে দাঁড়িয়ে এ সরকারেরও শেখ হাসিনার মতো একতরফা নীতি মেনে নেওয়া যায় না। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েই পলিসি তৈরি করতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টারের (বাক্কো) সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম, বেসিসের সহায়ক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান রাফায়েল কবীর, দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক ও প্রকাশক মো. সায়েম ফারুকী, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন নয়ন, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান প্রমুখ।
এএএইচ/এমআইএইচএস