দেশজুড়ে

বান্দরবানে যে কোনো সময় বন্ধ হতে পারে পৌর এলাকার পানি সরবরাহ

বান্দরবান পৌর এলাকার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পানি শোধনাগারের যন্ত্রপাতির ত্রুটি ও প্রায় ৩৫ বছর ধরে পানি সরবরাহে সাধারণ পিভিসি পাইপ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বান্দরবানের একমাত্র সরকারি পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে বান্দরবান পৌর এলাকায় ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জলবায়ুর বিরূ‍প প্রভাবের ফলে সুপেয় পানি সংকট তীব্র হচ্ছে। অপরিকল্পিত আবাসন, গাছপালা কাটা ও ঝিরি থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে অধিকাংশ ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে গেছে। এমনকি শুকনো মৌসুমে জেলার বৃহত্তম পানির উৎস সাঙ্গু নদীও মৃত প্রায়। এই অবস্থায় পৌর পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে পানি সংকটে পড়তে হবে বান্দরবান পৌরবাসীকে।

প্রকৌশল অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সাল থেকে বান্দরবান নিউগুলশান এলাকার একমাত্র পানি শোধনাগার থেকে পৌরসভা এলাকার প্রায় ৩ হাজার গ্রাহককে পানি সরবরাহ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ২০২৩ সালের বন্যায় পানি শোধনাগারটির ফিল্টারসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে এই শোধনাগার থেকে দৈনিক ৬০ লাখ লিটার সুপেয় পানি পাওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট না ঘটলে সর্ব্বোচ্চ ৪০ লাখ লিটার পানি পাওয়া যাচ্ছে। এতে এই এলাকার পানির চাহিদা মেটাতে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।

বান্দরবান পৌর সভার ক্যাচিংঘাটা, বনরুপা,হাফেজ ঘোনা, রোয়াংছড়ি বাসস্টেশন এলাকার বাসিন্দা মো. শাহলম, তপন, মিটুন দাশ, দাস, মো. হারুন জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরবরাহ প্রকৃত পানির প্রেসার এতই কম যে পাইপের পাশে ট্যাংক বসিয়েও পানি পাচ্ছেন না তারা। এতে প্রতিনিয়তই পানি কষ্টে দিন পার করছেন তারা।

বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী অনুপম দে বলেন, ২০২৩ সালের বন্যায় বান্দরবান পানি শোধনাগারটির ফিল্টারসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি সরবরাহে ব্যবহৃত পাইপগুলো ৩৫ বছরের পুরোনো হওয়ায় প্রেসারও দেয়া যাচ্ছে না। যার কারণে বেশ কিছু গ্রাহক পানি পাচ্ছেন না।

জনগণের পানি সংকট নিরসনে এই শোধনাগারটির সংস্কার বরাদ্ধটি অনুমোদন পেয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত টেকসই পৌর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ। বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয় ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন না করায় শোধনাগারটির যন্ত্রাংশ ও ফিল্টারগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। ফলে এই অবস্থায় যেকোনো সময় বান্দরবানে পৌর পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হবে।

নয়ন চক্রবর্তী/এনএইচআর/এমএস