দেশজুড়ে

হত্যার শিকার মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীর সৎকার সম্পন্ন, মামলা

রংপুরের তারাগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়ের সৎকার সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কুর্শা ইউনিয়নের পূর্ব রহিমাপুর হিন্দু পল্লীর চাকলা শ্মশানে তাদের সৎকার সম্পন্ন হয়।

এর আগে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোনাব্বর হোসেন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিনের উপস্থিতিতে যোগেশ চন্দ্র রায়ের মরদেহে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এদিকে দুপুরে নিহতের বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাত আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, নিহত দুজনের সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। নিহত দম্পতির বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাত ৯টা ২২ মিনিটে ছোট ছেলে রাজেশের সঙ্গে কথা হয় যোগেশের। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে দিনমজুর দীপক চন্দ্র রায় বাড়িতে কাজে গিয়ে প্রধান ফটকে ডাকাডাকি করলেও কেউ সাড়া দেননি। পরে প্রতিবেশীদের ডেকে মই বেয়ে প্রধান ফটকের ওপর দিয়ে ভেতরে ঢুকে খাবারঘরে যোগেশ চন্দ্রের ও রান্নাঘরে সুবর্ণা রায়ের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী দীপক চন্দ্র রায় বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে কাজ করতে যোগেশ দাদুর বাড়িতে যাই। সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত খুলিতে ধানের কাজ করি, কিন্তু এত বেলা হয়ে গেলেও কেউ বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় দরজা ধাক্কাধাক্কি করে ডাকি। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। এরপর আশপাশের লোকজন ডেকে মই বেয়ে ভেতরে ঢুকে দেখি ঘরে কেউ নেই। পরে ডাইনিং রুমের দরজা খুলে দেখি দাদুর মরদেহ আর রান্নাঘরে দিদার মরদেহ পড়ে আছে।

জানা যায়, খবর পেয়ে প্রথমে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পরে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পিবিআই ও র‍্যাবের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া রংপুর-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার ও জামায়াতের প্রার্থী এ টি এম আজহারুল ইসলাম, তারাগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেনসহ মুক্তিযোদ্ধারা বাড়িতে যান।

কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তুহিনুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় অত্যন্ত বিনয়ী পরোপকারী মানুষ ছিলেন। তারা জীবনের শেষ অধ্যায়ে পা দিয়েছেন। অথচ তাকে ও তার সহধর্মিণীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

তারাগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও তার স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। যারা যোগেশ ও তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।

জিতু কবীর/কেএইচকে/এমএস