গোসল শেষে তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করে অনেকেই তা আবার বাথরুমের রডে ঝুলিয়ে রাখেন। শুকানোর জন্য রেখে দেওয়া তো দূরের কথা, কখনো কখনো তোয়ালেটি সেখানেই পড়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু জানেন কি? এই সাধারণ অভ্যাসই অজান্তে ডেকে আনতে পারে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি। কারণ বাথরুমে সবসময়ই আর্দ্রতা থাকে, আর এই ভেজা পরিবেশ ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর দ্রুত বৃদ্ধি ঘটায়।
বাথরুমের যে অংশগুলো সবচেয়ে বেশি জীবাণুর কারখানা হিসেবে কাজ করে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে—তোয়ালে রাখার রড। সেখানে ভেজা তোয়ালে ঝুলিয়ে রাখলে জীবাণুগুলো সহজেই তোয়ালেতে ছড়িয়ে পড়ে।
ভেজা তোয়ালে রাখলে বাড়ে ত্বক ও স্বাস্থ্যঝুঁকিঅনেকেই মনে করেন, তোয়ালেতে বাজে গন্ধ না থাকলে তা পরিষ্কারই আছে। কিন্তু বিষয়টি সবসময় এমন নয়। তোয়ালে থেকে দুর্গন্ধ না এলেও তার ভেতরে অগোচরেই জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে ।
বাথরুমের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ তোয়ালে বা গামছা শুকোতে বাধা দেয়। আলো-হাওয়া না পাওয়ার কারণে সেখানে দ্রুত জন্মাতে পারে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস। দীর্ঘক্ষণ ভেজা তোয়ালে বা গামছা রেখে দিলে তার প্রতিটি তন্তুতে জমে থাকে আর্দ্রতা, যা জীবাণুর জন্য আদর্শ স্থান তৈরি করে। পরে সেই তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছলে এসব ব্যাকটেরিয়া সহজেই ত্বকে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও যে নানা ধরনের ত্বকের সমস্যা হয়দাদ, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ব্যাকটেরিয়াল স্কিন ইনফেকশন বা ব্রণ বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সর্দি-কাশি বা ভাইরাসজনিত রোগও সহজেই ছড়াতে পারে, বিশেষ করে পরিবারের সদস্যরা এক তোয়ালে ব্যবহার করলে। ভেজা তোয়ালে দিয়ে চোখ-মুখ মুছলে কনজাঙ্কটিভাইটিসের ঝুঁকিও বাড়ে।
তোয়ালে বা গামছা শুকাবেন যেখানেতোয়ালে কখনোই বাথরুমের ভেতরে শুকাতে রাখা উচিত নয়। আলাদা টাওয়েল-বার ব্যবহার করে সেটি ঘরের বাইরে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে আলো ও বাতাস ঠিকমতো আসে। সবচেয়ে ভালো হয়, ব্যবহারের পর তোয়ালে নিয়মিত রোদে শুকিয়ে নিলে। সূর্যের আলো ব্যাকটেরিয়া জন্মানো কমায় এবং তোয়ালে দ্রুত শুকিয়ে ফেলে। ফলে আর্দ্রতা জমে না থাকায় ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস জন্মানোর সুযোগও কমে যায়।
তোয়ালে পুরোপুরি শুকিয়ে না গেলে ভাঁজ করে রাখবেন না। প্রয়োজনে ঘরের ভেতরে ফ্যানের বাতাসে বা খোলা জানালার কাছে শুকাতে দিন।
তোয়ালের হাইজিন বজায় রাখতে কতদিন পর তোয়ালে বা গামছা পরিষ্কার করতে হবেঅনেকেই দিনের পর দিন একই তোয়ালে ব্যবহার করেন, এটি খুবই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে তোয়ালে ৩-৪ বার ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা উচিত। যেখানে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি, সেখানে আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন তাই ২-৩ বার ব্যবহারের পরেই তোয়ালে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
নিজেকে পরিষ্কার রাখার মতোই তোয়ালের হাইজিন বজায় রাখাও জরুরি, কারণ এটি আপনার দৈনন্দিন স্বাস্থ্য সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুন: ৪০ বছর বয়সে ফের মা হচ্ছে সোনম কাপুর, ঝুঁকির মাঝে নতুন সম্ভাবনাদীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে হতে পারে ভ্যারিকোস ভেইনস
এসএকেওয়াই/জেআইএম