জাতীয়

আরপিও’তে যুক্ত হলো ডাকযোগের ব্যালট গণনাসহ বিচারিক ক্ষমতা

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বেশ কয়েকটি অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এর মধ্যে ডাকযোগের ব্যালট গণনা, রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষমতা ও বিচারিক ক্ষমতা সংক্রান্তসহ বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) আরপিও’র সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে বিজি প্রেস। এই অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের স্বাক্ষরিত। অধ্যাদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালট গণনায় নতুন নিয়ম

ডাকযোগে প্রেরিত ব্যালট বাতিলের জন্য সুনির্দিষ্ট শর্তাবলী যুক্ত করেছে। একই সঙ্গে ডাকযোগে প্রেরিত ব্যালট গণনার জন্য বিশেষ প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

যেসব ক্ষেত্রে ডাকযোগে ব্যালট বাতিল হবে

কোনো প্রতীকের বিপরীতে টিক বা ক্রস চিহ্ন না দেওয়া হলে; একের অধিক প্রতীকের বিপরীতে টিক বা ক্রস চিহ্ন দেওয়া হলে; টিক বা ক্রস চিহ্ন এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যে, কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়া হয়েছে তা যুক্তি সংগতভাবে নিশ্চিত করা না গেলে; গণনার পূর্বে রিটার্নিং কর্মকর্তার দ্বারা ডাকযোগে ব্যালট গৃহীত না হলে; কোনো আদালত কর্তৃক সংশ্লিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট নির্বাচনি এলাকার প্রার্থীর তালিকায় কোনো পরিবর্তন করা হলে; ভোটারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না দেওয়া হলে।

ডাকযোগে ব্যালট গণনা প্রক্রিয়া

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়কে কেবল ডাকযোগে ব্যালট গণনার জন্য একটি ভোটকেন্দ্র হিসেবে গণ্য করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ডাকযোগে ব্যালট গণনার জন্য একজন প্রিজাইডিং অফিসার এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোলিং অফিসার নিয়োগ করবেন।

প্রিজাইডিং অফিসার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাদের নির্বাচনি/পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতিতে ডাকযোগে ব্যালটের খাম খুলে কমিশন নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে ভোট গণনা করবে।

গণনা শেষে প্রিজাইডিং অফিসার নির্ধারিত ফরমে একটি প্রমাণীকৃত বিবৃতি তৈরি করে দ্রুত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেবেন। রিটার্নিং অফিসার বিধান অনুসারে নির্বাচনি এলাকার সমন্বিত ফলাফলে এই গণনা অন্তর্ভুক্ত করবেন।

গণনা ফলাফল পাওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটপ্রাপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবেন।

বিজ্ঞপ্তির বিষয়বস্তু

গণবিজ্ঞপ্তির অধীনে সমন্বয়ের ফলে প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নাম এবং প্রাপ্ত ভোটের মোট সংখ্যা উল্লেখ থাকতে হবে।

তদন্তে সহায়তার জন্য নতুন বিধান

বিদ্যমান বিধানকে পুনঃসংখ্যায়িত করে নতুন ক্লজ যুক্ত করা হয়েছে। এই সংযোজনের ফলে নির্বাচন ডিউটিতে নিয়োজিত ব্যক্তিকে (তদন্তকারী) দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

স্ট্রাইকিং ফোর্স ও অন্যান্য সহায়তা: পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং নির্বাচন ডিউটিতে নিয়োজিত যেকোনো ফোর্সের কমান্ডার বা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহায়তা প্রদান করবেন।

ব্যর্থতার শাস্তি: যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া এই সহায়তা প্রদানে ব্যর্থ হলে, অস্বীকার করলে বা অবহেলা করলে তাকে অদক্ষতা বা অসদাচরণের দায়ে দোষী বলে গণ্য করা হতে পারে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার সহায়তা: রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারও দায়িত্ব পালনের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা প্রদান করবেন।

অপরাধ আমলে নেওয়ার পর আইন অনুসারে বিচারের জন্য উপযুক্ত আদালতের কাছে মামলাটি ফরওয়ার্ড করবে।

সহায়তা ও শাস্তির বিধান

তদন্তে সহায়তার জন্য অনুরূপ বিধান এই কমিটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, পুলিশ সুপার/পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবে এবং ব্যর্থ হলে তা অদক্ষতা বা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। এছাড়া রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারও কমিটিকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেবেন।

এমওএস/ইএ/জেআইএম