দেশজুড়ে

প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে প্রত্যেকেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাচ্ছি

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. আ. ন. ম. বজলুর রশীদ বলেছেন, আর্থিক দুর্নীতিই কিন্তু একমাত্র দুর্নীতি নয়। আর্থিক দুর্নীতি হলো দুর্নীতির যতগুলো স্তর আছে তার সর্বশেষ স্তর। আমরা রাস্তার উল্টা পথে যাচ্ছি, বিভিন্ন কাজে লাইনে না দাঁড়িয়ে নানাভাবে সুযোগ নিচ্ছি এখানে আর্থিক সম্পৃক্ততা নেই, তাই এগুলোকে আমরা দুর্নীতি মনে করছি না। কিন্তু এভাবে আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাচ্ছি।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বজলুর রশীদ বলেন, গতবার দেখেছি দুর্নীতির শীর্ষে আছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আইন-শৃঙ্খলার সঙ্গে অন্য যারা কাজ করে, তারাও কিন্তু এই দুনীতির অংশীদার। যখনই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য একজন অপরাধীকে ধরে তখন তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য অনেকেই দাঁড়িয়ে যায়। সেটা হোক আইনগতভাবে বা অন্যভাবে। এরকম কোনো না কোনোভাবে আমরা প্রত্যেকেই জড়িত আছি দুর্নীতির সঙ্গে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মাত্র দেশ আমাদের থেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত, সেটি হল আফগানিস্তান। এই দেশটির পরে আমরা দ্বিতীয় হয়েছি, এটি আমাদের ভাবার বিষয়। বাংলাদেশে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির ধারণা সূচকে বৈশ্বিক গড় নম্বর যেখানে ৪৩, সেখান মাত্র ২৩ পেয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে।

বিভাগীয় কমিশনার অফিস ও সিটি করপোরেশন কোনো দুর্নীতিতে জড়াবে না- এমন ঘোষণা দিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমাদের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি আছে, আমরা এই দুর্নীতিকে নির্মূল করতে চাই। এ অফিসে যদি দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের যে নীতি এটি আমরা বাস্তবায়ন ও পালন করব। তাহলে আমাদের তরুণরা শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠবে এবং আমরা একটি সুন্দর, সাবলীল এবং স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণ করতে পারব।

রাজশাহী দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মো.ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. খোরশেদ আলম, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈমুল হাছান, মহানগর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি তৌফিকুর রহমান লাবলু ও সহসভাপতি মো. এহছানুল হুদা এবং সনাক সভাপতি প্রফেসর ড. সিদ্ধার্থ কুমার শংকর তালুকদার।

অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সুধীজন ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জেলা পরিষদ মিলনায়তন চত্বরে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার। উদ্বোধন শেষে একই স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সাখাওয়াত হোসেন/এনএইচআর/এমএস