দেশজুড়ে

হাসপাতালের বাথরুমে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতক পেলো নতুন মা-বাবা

মাদারীপুরে ক্লিনিকের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক খুঁজে পেলো নতুন বাবা-মা। ৩৫টি আবেদন যাছাইবাছাই শেষে সাড়ে তিন লাখ টাকা বণ্ডে নিঃসন্তান দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নতুন মা-বাবার হাতে তুলে দেয়া হয় শিশুটিকে। মাদারীপুর সদর উপজেলা শহরের পাঠককান্দি এলাকার সাদিয়া আক্তার ও নাদিম আকন দম্পতি নবজাতককে দত্তক নিতে পেয়ে খুব খুশি।

জানা গেছে, ২ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মাদারীপুর শহরের লেকের দক্ষিণপাড়ের বাবু চৌধুরী জেনারেল হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাথী বেগম বাথরুমের ভেতর রক্তাক্ত অবস্থায় এক নবজাতককে দেখতে পান। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করে সমাজসেবা অধিদফতর।

এদিকে নবজাতকে নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হয়। পরবর্তীতে শিশুটিকে দত্তক নিতে ভিড় করেন অনেকেই। নবজাতককে দত্তক নিতে মাদারীপুর শিশু আদালতে আবেদন ৩৫টি। এরপর সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী চলে শুনানি। যাছাইবাছাই শেষে সিঙ্গাপুর প্রবাসী নাদিম আকন ও সাদিয়া আক্তার দম্পতিকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আদালত। সাড়ে তিন লাখ টাকা বণ্ডসহ ৫টি শর্তে দেওয়া হয় তাদের। পরে মঙ্গলবার বিকেলে নতুন মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে। শহরের পাঠকাকান্দি এলাকায় বসবাস সাদিয়া আক্তার ও নাদিম আকন দম্পতি নবজাতককে দত্তক নিতে পেরে খুব খুশি।

আরও পড়ুন:হাসপাতালের বাথরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল নবজাতক

শিশুকে দত্তক নেওয়া সিঙ্গাপুর প্রবাসী নাদিম আকন বলেন, আমি শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে ছুটে এসেছি। আমি মেয়েটিকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। কোথাও কোনো কমতি রাখবো না। আমি ওকে পেয়ে খুব খুশি।

সাদিয়া আক্তার বলেন, এই শিশুটি এখন থেকে আমাদের সন্তান। মায়ের আদর দিয়ে ওকে মানুষ করবো। কোনো কষ্ট-দুঃখ হতে দিবো না। সুখে-শান্তিতে আমাদের পরিবারে থাকবে সে। আমাদের ঘরকে ও আলোকিত করে রাখবে।

মাদারীপুর সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসার শেখ নাহিয়ান ওয়াহিদ বলেন, আদালত যোগ্য মনে করে এই দম্পতির কাছে শিশুটিকে দত্তক দিয়েছেন। শিশুটির খোঁজখবর নিয়ে দুই মাস পর পর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। সমাজসেবা অধিদফতর এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এনএইচআর