বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, এলএনজি আমদানি অত্যন্ত ব্যয়বহুল, তাই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে চাচ্ছে সরকার। আগে এসব প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হতো, কিন্তু এখন দুর্নীতি বন্ধ হওয়ায় কিছু আমলা ও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বাধা দিচ্ছে। দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা দুর্নীতিযুক্ত প্রক্রিয়া থেকে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বৈঠকে বাতিল হওয়া ১২টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে পুনরায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন হওয়া ৩৪টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প গত বছর বাতিল করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। বাতিল হওয়া এসব প্রকল্পের মধ্যে এখন ১২টি ফের অনুমোদন দেওয়া হলো। এ প্রকল্পগুলোর প্রতিটিতে এখন ২ থেকে ৩ সেন্ট কম দরে বিদ্যুৎ কেনা যাবে বলেও জানান উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, আজকে সৌর বিদ্যুতের ১২টা প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে, যেখান থেকে ৯৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। প্রকল্পগুলো আগে ২০১০ সালের বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের অধীনে মূল্য ঠিক করা ছিল। যেহেতু আইনটা বাতিল হয়ে গেছে সে জন্য প্রকল্পগুলোও বাতিল হয়েছিল। কারণ আমাদের ধারণা ছিল যে এগুলো ওভার প্রাইস। এখন ১২টা প্রকল্পের প্রতিটিতেই ২ থেকে ৩ সেন্ট দাম কম পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এলএনজি আমদানি করা খুব ব্যয়বহুল। তাই আমরা সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে চাই। কিন্তু এটার ক্ষেত্রে আমরা নানানভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এবং আমলাদের কাছ থেকে বাধা পাচ্ছি। আগে এসব প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হতো। এখন দুর্নীতি বন্ধ হওয়ার ফলে আমলা ও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীরা বাধা দিচ্ছে। তারা উন্মুক্ত দরপত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আসতে চাচ্ছে না। তারা অনেককে টেন্ডারে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছে। ফলে অনেকগুলোতে আমরা বিড পাইনি।
সরকারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার ব্যাখ্যা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগে যারা কাজ করে তারা সবাই যে সহযোগিতা করে এটা বলা যাবে না। সরকার যে রূফটোপ সোলার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেখানে সব সংস্থার দরপত্রে অংশ নিলেও পল্লীবিদ্যুতে হয়নি। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করতে একটা ট্রান্সফরমার বসানোর শর্ত জুড়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যানকে বলেছি, যেসব অফিসার সরকারের এ সৌরবিদ্যুৎ কর্মসূচিকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আর এর সঙ্গে যদি আরইবি জড়িত থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়। আমরা দুর্নীতিযুক্ত প্রক্রিয়া থেকে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি।
এমএএস/এমএএইচ/