প্রশ্ন: সামর্থ্য থাকার পরও হজ পালনে দেরি করলে কি গুনাহ হবে?
উত্তর: হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ বা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বিধানের অন্যতম। সামর্থ্য থাকলে জীবেন একবার হজ পালন করা ফরজ। কোরআনে অনেকগুলো আয়াতে হজের বিধিবিধান আলোচিত হয়েছে। হজ আবশ্যক করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, নিশ্চয় প্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য স্থাপন করা হয়েছে, তা মক্কায়। যা বরকতময় ও হিদায়াত বিশ্ববাসীর জন্য। তাতে রয়েছে স্পষ্ট নির্দশনসমূহ, মাকামে ইবরাহিম। আর যে তাতে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ হয়ে যাবে এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ। আর যে কুফরি করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী। (সুরা আলে ইমরান: ৯৬, ৯৭)
কেউ যখন হজ পালনের সামর্থ্য অর্জন করে, তার কর্তব্য হলো গড়িমসি না করে দ্রুত হজ পালন করা। অযথা দেরি করা ঠিক নয়। হাদিসে এ ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ দিয়ে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে সে যেন অবিলম্বে তা আদায় করে। কারণ মানুষ কখনও অসুস্থ হয়ে যায়, কখনও প্রয়োজনীয় জিনিস হারিয়ে যায় এবং কখনও অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে যায়। (সুনানে ইবনে মাজা: ২৮৮৩)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, হজ ফরজ হলে অনতিবিলম্বে হজ পালন করা উচিত যেহেতু দেরি করলে মৃত্যু বা অন্য কোনো বাধা আসায় ফরজ হজ পালন অসম্ভব হয়ে যেতে পারে।
এ হাদিসের ভিত্তিতে অনেক ফকিহ বলেছেন, হজ ফরজ হলে অনতিবিলম্বে হজ করা ওয়াজিব। গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া হজ পালনে বিলম্ব করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে হজ করা হলে সে গুনাহ রহিত হয়ে যাবে। আল্লামা ইবনুল হুমাম (রহ.) বলেন, সম্ভব হলে সামর্থ্য অর্জনের পর প্রথম বছরেই হজ পালন করতে হবে। প্রথম বছরে হজ পালন সম্ভব হওয়ার পরও বিলম্ব করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে যদি সে হজ করে ফেলে, তাহলে গুনাহ রহিত হয়ে যাবে। (ফাতহুল কাদির: ২/৩১৪)
তাই হজ ফরজ হলে অহেতুক গড়িমসি না করে হজ করে নিতে হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃত হজ পালনে দেরি করা যাবে না।
ওএফএফ