বিজয় দিবসে ঘৃণা প্রকাশের অংশ হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে একদল শিক্ষার্থীর পাকিস্তানের পতাকা আঁকাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মধ্যরাতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে জবি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে একদল শিক্ষার্থী পাকিস্তানের পতাকা আঁকছিলেন। এ সময় ওই পথ দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী’ প্রকল্পের আওতায় আবাসিক সুবিধা পাওয়া শিক্ষার্থীরা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রকল্পের শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তির নীতিমালা পুনর্বিন্যাস ও সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে দুপুর থেকে প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে রাখে। সেখানে আটকা পড়েন উপাচার্য রেজাউল করিম। রাত সাড়ে ৩টায় প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনেই আটকা রয়েছেন।
ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের পতাকা আঁকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা/ছবি: সংগৃহীত
ঘটনার সময় পাকিস্তানের পতাকা আঁকায় বাধা দেয় প্রক্টরিয়াল টিম। একই সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
হামলার শিকার দুই সাংবাদিক হলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের মিনহাজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান।
ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও রাজাকারদের প্রতি জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে রাতেই প্রধান ফটকের সামনে আবারও পতাকা আঁকেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার পর শাখা ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
হামলার শিকার কালের কণ্ঠের সাংবাদিক মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে জানান, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সড়কে পাকিস্তানের পতাকা আঁকছিলেন। এ সময় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী’ প্রকল্পের আওতায় আবাসিক সুবিধা পাওয়া শিক্ষার্থীরা বাসে করে প্রধান ফটক দিয়ে বের হতে চাইলে, পতাকা আঁকতে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের দ্বিতীয় ফটক ব্যবহার করতে বলেন।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ফটক খুলে দেওয়া হলেও একপর্যায়ে আবাসিক সুবিধাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা প্রধান গেট দিয়েই বের হওয়ার চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ সময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে তিনি ও তার সহকর্মী আহত হন।
মেহেদী হাসান আরও বলেন, ঘটনার পর প্রক্টরিয়াল সদস্যরা এসে প্রথমে পাকিস্তানের পতাকা আঁকতে নিষেধ করেন এবং হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর হলের একদল শিক্ষার্থী ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে আবার ফিরে এসে হামলার চেষ্টা করে। পরে তারা চলে গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হলের শিক্ষার্থী ও প্রক্টরিয়াল সদস্যদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমডিএএ/এমএমকে