ঘন কুয়াশার কারণে ভারতের দিল্লি-আগ্রা এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা থেকে লাগা আগুনে অন্তত চারজন পুড়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে সাতটি বাস ও তিনটি গাড়ির সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কম থাকায় একের পর এক যানবাহন এক্সপ্রেসওয়েতে ধাক্কা খায়। সংঘর্ষের পর কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে গেলে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মথুরার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) শ্লোক কুমার দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে ও বন্ধ হয়ে যাওয়া মহাসড়কটি দ্রুত পরিষ্কার করার কাজ চলছে। একই সঙ্গে আটকে পড়া যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার সকালে মথুরার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশার কারণে সাতটি বাস ও তিনটি ছোট গাড়ির সংঘর্ষে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত চারজন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এখনো কুয়াশা রয়েছে। দৃশ্যমানতা কম থাকাই এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। সংঘর্ষের পর কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়।
উদ্ধার তৎপরতা সম্পর্কে এসএসপি জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। তার ভাষ্য অনুযায়ী, উদ্ধার অভিযান প্রায় সম্পন্ন হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, আহত প্রায় ২৫ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ গুরুতর আহত নন এবং সবাই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে থাকা অন্য যাত্রীদের সরকারি যানবাহনে করে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে, মথুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) চন্দ্র প্রকাশ সিং ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার কারণ পরে তদন্ত করা হবে, তবে আপাতত সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হলো উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম।
ডিএম বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা। দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ১২টির বেশি ফায়ার টেন্ডার ও ১৪টির বেশি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়। তিনি জানান, আহতদের সিএইচসি বালদেব ও জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং কেউই আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেই।
তিনি আরও বলেন, বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের বাসে করে হাসপাতাল ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পুরো সরকারি ব্যবস্থা দ্রুত সক্রিয় হয়েছে। ঘন কুয়াশা ও কম দৃশ্যমানতার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এর একদিন আগেই ঘন কুয়াশার কারণে দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতেও প্রায় ২০টি যানবাহনের সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর প্রায় ৫টার দিকে হওয়া ওই দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ চারজন নিহত হন ও গুরুতর আহত হন আরও ১৫ থেকে ২০ জন। সেখানেও ঘন কুয়াশাজনিত দৃশ্যমানতার অভাবকেই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ