দেশজুড়ে

ইতালিতে বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা

ঘরভর্তি মানুষ। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। দূরদেশে কাছের মানুষের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তিন বছর আগে দেশ ছেড়ে ইতালি যাওয়া শরীয়তপুরের যুবক নাঈম ইসলামের মৃত্যুর খবরে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এ দৃশ্য দেখা যায় পরিবারে।

পরিবারের দাবি, ইতালির ছিনতাইকারীরা তার মালামাল লুট করে নিতেই গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানা, পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তিন বছর আগে ২০ লাখ টাকা ঋণ করে দেশ ছাড়েন শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মাহমুদপুর এলাকার এনামুল হক মাদবর ও তাজিয়া বেগম দম্পতির ছেলে নাঈম ইসলাম শান্ত। এক বছর আগে লিবিয়ার সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছান তিনি। এরপর সেখানে থাকতেন নেপোলি শহরের একটি ক্যাম্পে। পরিবারের হাল ধরতে এই যুবক কাজ নেন একটি রেস্টুরেন্টে। ধীরে ধীরে ভাগ্য যখন প্রসন্ন হচ্ছিলো তখনি ঘটে এ ঘটনা। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে ইতালির নেপোলি শহরে ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে নিহত হন তিনি।

পরিবারের অভিযোগ, দুষ্কৃতিকারীরা তার টাকা-পয়সা লুট করার উদ্দেশ্যে গাড়িচাপা দিয়ে মেরে ফেলে নাঈমকে। এই খবর বুধবার দেশের বাড়িতে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্বজনরা। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।

নিহতের ভাই বাপ্পি মাদবর বলেন, আমার ভাই কাজ শেষে ফেরার পথে মাঝেমধ্যেই ওই এলাকার কিছু বখাটে জ্বালাতন করতো। গতকাল রাতে তারা আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। আমরা দোষীদের বিচারের পাশাপাশি ভাইয়ের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে আবেদন জানাই।

নাঈমের ছোট বেলার বন্ধু ও চাচাতো ভাই আল-ইমরান অভিযোগ করে বলেন, ইতালিতে আমার ভাইয়ের থেকে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করছিল স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। গত রাতে বাসায় ফেরার পথে তাকে হত্যা করে তারা। আমরা ভাই বেঁচে নেই এটা মেনে নিতে পারছি না।

নিহতের বাবা এনামুল হক মাদবর বলেন, আমি শুধু আমার ছেলের মুখটি একবারের জন্য দেখতে চাই। যেভাবেই হোক সরকার যেন আমার ছেলের লাশটি দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেয়।

বিষয়টি নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলোরা ইয়াসমিন বলেন, আমরা বিষয়টি আপনাদের (গণমাধ্যমকর্মী) মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। পরিবারের লোকজনের আবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিধান মজুমদার অনি/এমএন/এমএস