সাতক্ষীরায় উন্নয়নমূলক কাজে ঠিকাদারদের হুমকি-ধামকি এবং মালামাল সরবরাহের নামে অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে। নিজেকে দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি এসব অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ফলে জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম বাধার মুখে পড়ছে। সম্প্রতি এমনই এক পরিস্থিতিতে চাঁদা না দেওয়ায় কাজ আটকে দেওয়ার পর পুলিশি পাহারায় সেই কাজ শেষ করতে হয়েছে এক ঠিকাদারকে।
ভুক্তভোগী ঠিকাদারদের অভিযোগ, জেলার প্রায় সব উপজেলায় কাজ করতে গেলেই তারা ‘নীরব’ চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া, এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটছে।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বদ্দিপুর কলোনি এলাকায় ‘মেসার্স ছয়ানী এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক নির্মাণের কাজ করছিল। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জাহিদ হাসান অভিযোগ করেন, কাজ চলাকালীন স্থানীয় কয়েকজন যুবক তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তাকে লাঞ্ছিত করে এবং নির্মাণাধীন সড়কটি সাবল দিয়ে খুঁড়ে ফেলে।
এ ঘটনার পর ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশ পাহারায় কাজটি সম্পন্ন করা হয়। পুরাতন সাতক্ষীরা সড়ক থেকে গোবিন্দপুর বাজার ভায়া জেয়ালা সড়কের এই কার্পেটিং কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ১ কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার ৬৯৩ টাকা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ঠিকাদার জাহিদ হাসান বলেন, আমরা সরকারের উন্নয়ন কাজের অংশীদার। আমাদের কাজে বাধা দেওয়া মানে দেশকে পিছিয়ে দেওয়া। বর্তমানে সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে গেলে আমরা নীরব চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছি। বদ্দিপুরে আমার কাছে টাকা চাওয়া হয়েছিল, না দেওয়ায় তারা রাস্তা খুঁড়ে ফেলে এবং আমাকে চরমভাবে হেনস্তা করে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পাহারায় কাজটি শেষ করতে হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কার্পেটিং চলাকালীন স্থানীয় কিছু বখাটে যুবক ঠিকাদারের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় তারা সদ্য নির্মিত সড়কটি সাবল দিয়ে খুঁড়ে ফেলে। বাধা দিতে গেলে তারা অফিস স্টাফ ও ঠিকাদারের লোকজনকে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পুলিশ পাহারায় কাজটি শেষ করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পারি বদ্দিপুর এলাকায় সরকারি কাজে কিছু বখাটে বাধা প্রদান করছে। খবর পেয়ে সেখানে একজন সাব-ইন্সপেক্টর ও দুইজন কনস্টেবল পাঠানো হয় এবং তাদের উপস্থিতিতেই কাজ শেষ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/এমএস