জাতীয়

নভেম্বরে ৫৩৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮৩ জন

দেশে গত নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৩৪টি। এতে ৪৮৩ জন নিহত এবং এক হাজার ৩১৭ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও হতাহত ঘটেছে মোটরসাইকেল ঘিরে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সংগঠনটি জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, নিহতদের মধ্যে নারী ৬৪ ও শিশু ৭১ জন। এছাড়া ১০৬ জন পথচারী এবং যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন। এসময় ছয়টি নৌ-দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ও পাঁচজন নিখোঁজ এবং ৪৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হন।

যানবাহনভিত্তিক চিত্রমোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী ১৯৪, বাসের যাত্রী ২৪, পণ্যবাহী যানের আরোহী ২২, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস আরোহী ১৪, তিন-চাকার গাড়ির যাত্রী ৮৩, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত স্থানীয় যানবাহনের যাত্রী ৩১ এবং রিকশা ও বাইসাইকেল আরোহী ৯ জন নিহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল মোটরসাইকেল ২৪১, বাস ১১২, ট্রাক ১২৭, কাভার্ডভ্যান ২৩, পিকআপ ২৯, ট্রাক্টর ৯, ট্রলি ১৭, ডাম্প ট্রাক ২০, মাইক্রোবাস ১৪, প্রাইভেটকার ২১, তিন-চাকার যান ১৫৩, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত স্থানীয় যান ৪২, বাইসাইকেল ও রিকশা ২৬ এবং অন্যান্য যান ৩৮টি।

বিভাগ ও জেলার চিত্রঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৪১টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ৪১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩৭ জন। সবচেয়ে কম শেরপুর ও পঞ্চগড় জেলায়। ৯টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুজনের।

দুর্ঘটনার প্রধান কারণরোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।

সুপারিশদুর্ঘটনা রোধে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা তৈরি করতে হবে।

এছাড়া, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করা হয়।

এফএইচ/একিউএফ/এএসএম