ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করছেন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চার রাস্তা মোড়ে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান নেন। অবরোধে মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের হয়।
ধানের শীষের মনোনয়ন জনসম্পৃক্ত ত্যাগীর জন্য চূড়ান্ত হোক, করতে হবে-স্লোগানে ‘আমরা ধানের শীষ পরিবার’ ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এরআগে দুপুর থেকে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা উপজেলা চত্বরে সমবেত হন। এসময় তারা ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে মিছিল করে।
এসময় উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম, রফিউলদৌল্লাহ রঞ্জু, শামীম মিয়া, আহমেদ শরীফ,রেজাউল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন ১/১১-এ দল এবং জিয়া পরিবারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিমন্দ করেছিলেন। ছাত্রদল ভেঙে সংস্কারপন্থীর পক্ষে নেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ২০০৮ সালে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় দলের ডাকে সাড়া না দিয়ে মালেশিয়ায় অবস্থান করেন। গত ১৮-১৯ বছরে গোবিন্দগঞ্জ না গিয়ে মালয়েশিয়া ও ঢাকায় থেকে চাকরি এবং ব্যবসা করে আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করেছেন।
আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত না থাকায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়নি। তারপরও তাকে দলে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তাই তার মনোনয়ন পরিবর্তন করে ত্যাগী নেতাদের দলীয় মনোনয়ন প্রদানের দাবি জানান তারা।
গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকনকে দলীয় মনোনয়ন দেয় দলটি। এর পর থেকে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে আসা নেতাদের সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা নানা কর্মসূচি পালন করছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতার সমর্থকরা।
কর্মসূচির ব্যাপারে জানতে চাইলে জাকিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিগতে সব আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে মামলা,হামলা শিকার হয়েছি। সেই সময় দুর্বিষহ জীবন যাপন করেছি। ফ্যাসিস্ট সরকার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সব সময় তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পাবে দলের ত্যাগী নেতা।
এদিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শামীম কায়সার লিংকন বলেন, যারা মিছিল করছে তারা দলের কোনো পদ-পদবিতে নেই। একটি মহল তাদের উসকে দিচ্ছে। ভুল বুঝে তারা এই কর্মসূচি করছে। এটি থাকবে না, দ্রুত সময়ের মধ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের নির্দেশ মেনে কাজ করবে। উপজেলা বিএনপি থেকে ব্যবস্থা নেবে।
আনোয়ার আল শামীম/এমএন