‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার এক সন্তানকে বুকে নিয়েছে। মা তার সন্তানকে আবার ফেরত পেয়েছে। আমরা তার জন্য দোয়া রাখি।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে নিয়ে এভাবেই অনুভূতি ব্যক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির দাফন শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও জাতির ন্যায়সংগত সংগ্রামের অগ্রসৈনিক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির দাফন আজ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ তার এক সন্তানকে মায়ের মতো বুকে টেনে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ হাদি এখন আর শুধু একজন ব্যক্তি নন- তিনি ইতিহাস, তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তার মৃত্যুতে মানুষের যে গভীর ভালোবাসা ও আবেগ প্রকাশ পেয়েছে, তা প্রমাণ করে আধিপত্যবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়সংগত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে পুরো বাংলাদেশ সবসময় একাত্ম।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, পরিবারের অনুরোধ, ডাকসু নেতাদের প্রস্তাব, সরকারের নির্দেশনা এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি সংলগ্ন এলাকায় শহীদ ওসমান হাদিকে দাফন করার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, এই কবরস্থানে সমাধিস্থ হওয়ার সুযোগ খুব অল্পসংখ্যক সৌভাগ্যবান মানুষের হয়, যা শহীদ ওসমান হাদির হয়েছে। এটি তার অবদানের প্রতি জাতির গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং পুরো দেশবাসীর পক্ষ থেকে শহীদ ওসমান হাদিকে সম্মান জানানো হলো। আমরা আশা করি, তার আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।
হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড কোনো সাধারণ অপরাধ নয়; এটি একটি আদর্শকে স্তব্ধ করার অপচেষ্টা। তিনি দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে পূর্ণাঙ্গ বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এরপর শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
এদিকে শহীদ ওসমান হাদিরর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ শোক পালন করা হয়। এ উপলক্ষে উপাচার্যের ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এফএআর/ইএ