দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত লাভজনক কয়লা খনি বড়পুকুরিয়াকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ লোকসানি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে বন্ধের চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক নেতারা।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা। এসময় তারা খনি রক্ষায় ৬ দফা দাবি পেশ করেন। পাশাপাশি দাবি আদায় না হলে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন শ্রমিক নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সিবিএ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় খনির কয়লা ব্যবহার হচ্ছে না। বর্তমানে কোল ইয়ার্ডে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ—প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুত রয়েছে। কয়লার স্তূপের উচ্চতা ৫০ ফুটের বেশি হয়ে যাওয়ায় পাহাড়ের মতো ধসে পড়ছে, যা বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে হাইওয়ে সড়ক বন্ধ হওয়ার উপক্রম তৈরি করেছে।
শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করেন, প্রতি টন কয়লা উৎপাদনে ব্যয় হয় ১৭৬ ডলার, অথচ পিডিবি খনিকে দিচ্ছে মাত্র ৯১ থেকে ১০৭ ডলার। যেখানে খোলা বাজারে এই কয়লার দাম ২০০ ডলারের বেশি, সেখানে পিডিবিকে কম মূল্যে কয়লা সরবরাহ করে খনিটিকে লোকসানের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বক্তাদের দাবি, আদমজী পাটকলের মতো এই খনিকেও ‘লস প্রজেক্ট’ বানিয়ে বন্ধের পাঁয়তারা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে খনি সচল রাখতে ৬টি দাবি উত্থাপন করেন তারা। দাবিগুলো হলো- ১. পিডিবিকে কম দামে কয়লা না দিয়ে লোকাল মার্কেটে ২০০ ডলারের বেশি মূল্যে কয়লা বিক্রির অনুমতি দেওয়া। ২. লোকাল মার্কেটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পিডিবির কয়লার মূল্য নির্ধারণ করা। ৩. বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বোর্ড বিদ্যুতের লোক দিয়ে পরিচালনা করা যাবে না। ৪. খনি বন্ধের চক্রান্ত বন্ধ করা। ৫. কয়লার দাম নির্ধারণে শ্রমিক প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া। ৬. খনিটি যেন লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয় তার নিশ্চয়তা প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাশেম শিকদারের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিবিএ এর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, খনি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রায়হানুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এমদাদুল হক মিলন/কেএইচকে/এএসএম