ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন দেওয়ালে শোভা পাচ্ছে গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির নানা উক্তি। কাউতুলী থেকে জেলা শহরে ঢুকলেই নজর কাড়ছে এসব লেখা। ‘ঐক্যবদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর’ নামে একটি সংগঠন এসব দেওয়াল লিখন করে।
ডিসি বাংলোর উল্টোদিকের দেওয়ালে লিখছিলেন মো. নজরুল ইসলাম নামে এক যুবক। তিনি বললেন, ‘গত দু’দিন ধরে আমি বিভিন্ন দেওয়ালে শহীদ ওসমান বিন হাদির উক্তি লিখছি। আমরা চাই হাদি ভাইয়ে উক্তি, চেতনা যেন বেঁচে থাকে। তার এসব উক্তি দেখে আমাদের মাঝে যেন চেতনা জাগ্রত হয়। মানুষের মাঝেও যেন তার চেতনা জাগ্রত হয়।’
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কাউতলী এলাকার ওই দেওয়ালের পাশাপাশি ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের দেওয়ালেও এসব উক্তি লেখা হয়েছে। আরও কিছু জায়গায় হাদির উক্তি লেখার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পথচারীরা অনেকেই আগ্রহ ভরে দেওয়ালের এসব লেখা দেখছেন। আঁকার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে অনেকে কথা বলছেন।
দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা ছিলো, ‘জান দেবো, জুলাই দিব না’, ‘আমি চলে গেলে আমার সন্তান লড়বে’, ‘একটা ইনসাফের হাসি নিয়ে আমি আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে চাই’, ‘আমি হাসতে হাসতে আল্লাহর কাছে ভীষণ সন্তুষ্ট নিয়ে পৌঁছাতে চাই, আমি যেন একটা ন্যূনতম ঐ জীবনটা লিড করতে পারলাম।’ মৃত্যুর আগে শরিফ ওসমান বিন হাদি বিভিন্ন সময়ে এসব কথা বলেছেন, যা তিনি গুলিতে নিহত হওয়ার পর সারাদেশে আলোচিত হয়। হাদি হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে মিছিলে এসব উক্তি দিয়ে স্লোগান দেওয়া হয়।
কাউতলী এলাকায় দেয়াল লিখনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মো. আল আমিন বলেন, ‘উদ্যোগটি খুব ভালো। শহীদ হাদি ভাইয়ের অনেক কথা ভাইরাল হয়েছে। ওনি আমাদের হৃদয়ে আছেন। তারপরও এ ধরনের উক্তি দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হবো।’
ঐক্যবদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে দেওয়াল লিখনের কাজ চলছে জানিয়ে এর অন্যতম উদ্যোক্তা শেখ আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণঅভুত্থাণের অন্যতম মহানায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। আমরা হাদি ভাইকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছি। তিনি বিভিন্ন সময়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন এর গুরুত্বপূর্ণ খণ্ডাংশ আমরা দেওয়ালে লিখছি। এসব উক্তি কালজয়ী ও হৃদয়স্পর্শী। পথচারীরা যখন এসব লেখা পড়বে তাতে ওনার প্রতি দোয়া ও ভালোবাসা আসবে এবং দেশ গড়ার বিষয়ে তার যে অবস্থান ছিল সেটা সবাই জানতে পারবে। ইতোমধ্যে এ কার্যক্রম অনেকের কাছে প্রশংসা পেয়েছে।’
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এমএন/এএসএম