দীর্ঘ দেড়যুগ পর দেশে পা রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এজন্য ঢাকার ৩০০ ফিটে গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছে দলটি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৬৩ জেলা থেকেই ঢাকায় রওয়ানা দিচ্ছেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। বিভিন্ন পরিবহনে করে ঢাকায় ছুটছেন তারা। দলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ট্রেনও রিজার্ভ করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মেহেরপুর
মেহেরপুর জেলা থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিল্টন জানান, জেলার তিনটি উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ঢাকায় যাবেন। পাশাপাশি অনেক নেতাকর্মী নিজ নিজ সুবিধাজনক সময় ও উপায়ে এরইমধ্যে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। অনেকে সেখানে পৌঁছেছেন।
নওগাঁ
নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০০টি বাস ভাড়া করেছে নওগাঁ জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু বলেন, দেশনায়ককে বরণ করে নিতে জেলা বিএনপি অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে। নেতাকর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০০টি বাস ভাড়া করা হয়েছে। প্রতিটি বাসে ৬০-৬৫ জন করে যেতে পারবেন। এখন পর্যন্ত আমাদের ধারণা, প্রায় সাত হাজার নেতা কর্মী নওগাঁ থেকে ঢাকায় যাবে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গাইবান্ধা
গাইবান্ধা থেকে বিএনপি-অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাত উপজেলার ৮১টি ইউনিয়ন এবং চারটি পৌরসভার বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সবগুলো ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। পাঁচ শতাধিক পরিবহন, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ভাড়া করা হয়েছে। অনেকে বিভিন্নভাবে গতকাল থেকে ব্যক্তিগতভাবে ও ট্রেনে করে ঢাকায় যাচ্ছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জের দুই উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে ৩০০ গাড়িবহরে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হবেন বলে জানানো হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের জেলা বিএনপির উদ্যোগে শত শত গাড়ি যাবে। তবে গাড়ির সংখ্যা এখনো বলতে পারছি না। আমরা আজ প্রতিটি ইউনিট নিয়ে আলোচনায় বসবো। মূলত আলাদা আলাদা প্রার্থীরা নিজ আসনের হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হবেন।’
নেত্রকোনা
ঢাকায় নেতাকে স্বাগত জানাতে নেত্রকোনা বিএনপির ৫০ হাজার নেতাকর্মী প্রস্তুতি নিয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. আনোয়ারুল হক বলেন, ‘২৫ ডিসেম্বর একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। ওই দিনে আমাদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। নেতাকে স্বাগত জানাতে বিএনপির পক্ষ থেকেই প্রায় ৫০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এজন্য বাস, মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাড়া নেওয়া হয়েছে।’
খুলনা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা বিএনপি। মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষ থেকে প্রায় ১২-১৪ হাজার নেতাকর্মী ঢাকা যাবেন। খুলনা মহানগর থেকে শতাধিক এবং জেলা থেকে ৫০টির বেশি বাসে করে তারা রওয়ানা দেবেন। একটি বিশেষ ট্রেন চেয়ে রেল সচিবের কাছে আবেদন করেছেন দলটির নেতারা।
রাজশাহী
রাজশাহী থেকে ৩৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ও সমর্থক ঢাকায় যাবেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ট্রেন, বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে করে ঢাকায় যাবেন তারা।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, রাজশাহী-৬ আসন থেকে ৪-৫ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন। সবচেয়ে বেশি এই আসন থেকে যাবেন। এছাড়া রাজশাহীর সব উপজেলা থেকে সবমিলিয়ে ২২-২৫ হাজার নেতাকর্মী যাবেন।
রংপুর
রংপুর থেকে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জানান, রংপুর থেকে ৫০ হাজার মানুষ ঢাকা যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) অনেকেই রাজধানীতে পৌঁছে গেছেন। বাকিরা বুধবার রিজার্ভ গাড়িসহ বিভিন্নভাবে ঢাকা পোঁছে যাবেন।
লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুর থেকে ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সড়ক ও নদীপথে তারা ঢাকা যাবেন। এরইমধ্যে অনেকে পৌঁছে গেছেন। বাকিরা বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতের মধ্যে পৌঁছে যাবেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান জানান, তারেক রহমানকে দেখতে লক্ষ্মীপুর থেকে বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। দলের পক্ষ থেকে শতাধিক বাস দেওয়া হয়েছে। তবে বেশিরভাগই ব্যক্তিগত উদ্যোগ-খরচে ঢাকায় যাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা
ঢাকায় আয়োজিত প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সাতক্ষীরা জেলা থেকে ১০-১২ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন বলে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পরিবহন সংকটের কারণে অনেক নেতাকর্মী ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। কেউ আগেভাগেই ঢাকায় পৌঁছে আত্মীয়-স্বজনের বাসা কিংবা হোটেলে অবস্থান করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. আবু জাহিদ ডাবলু জাগো নিউজকে বলেন, ‘সদর আসন থেকে ৩০টি বাস এবং ৩০টি মাইক্রোবাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি আসনের মনোনীত প্রার্থীকে আলাদাভাবে ২০-৩০টি গাড়ি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে শতাধিক যানবাহন ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হবে।’
বাগেরহাট
জেলার ৯টি উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীরা ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ উপলক্ষে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ভাড়া করা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, বাগেরহাট থেকে চারটি ও কচুয়া থেকে ছয়টি বাসসহ প্রতিটি উপজেলা থেকে বিভিন্ন পরিবহন ভাড়া করা হয়েছে।
এসআর/এএসএম