জাতীয়

ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক, রাজনৈতিক বিষয়ে কাজ চলছে

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে। রাজনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সরকার কাজ করছে। এটি খুব যে খারাপ হয়ে গেছে তা নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি কোনোভাবে যেন অস্বাভাবিক না হয়। বাংলাদেশ কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গেই তিক্ত সম্পর্ক চায় না।’

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি কিন্তু সবসময় বলি যে আমাদের বাণিজ্য আর রাজনীতিকে আলাদা করে দেখতে হবে। ভারত থেকে যদি চাল না এনে এখন ভিয়েতনাম থেকে আনতে যাই, আরও ১০ টাকা করে (কেজিতে) বেশি লাগবে। আমি যদি ভারত থেকে চাল প্রতিযোগিতামূলক দামে পাই তাহলে অন্যখান থেকে আনবো না। ভালো হবে, আমি চাল আনতে শুনলে তারা একটু খুশি হবে।’

ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক এখন মোটামুটি অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈদেশিক বিষয়ে তো রেটরিক্স (বাগাড়ম্বর) অনেক বেশি হয়। রাজনীতিবিদরা এমন রেটরিক্স করে, আপনি জানেন তো। রাজনীতিবিদরা কথা বলে বাসায় গিয়ে বলেন, যা বলছি বলার জন্য বলছি। তো সেরকম রেটরিক্স হচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি সম্পর্ক খুব একটা খারাপের দিকে যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি। সেটার প্রমাণ আমি ভারত থেকে এর আগেও চাল এনেছি। কিছুদিন আগে পেঁয়াজের ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে একটু দেরি হয়ে গেছে। হয়তো আরও দাম কমতো। কারণ ভারতে পেঁয়াজ তারা ৫-১০ টাকাও (প্রতি কেজি) বিক্রি করতে পারে নাই। জমে ছিল। এখন তাড়াতাড়ি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আনতে বললো।’

আর দেড় মাসের মতো ক্ষমতায় থাকা অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার জন্য কী কাজ করছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক সম্পর্কটায় কাজ হচ্ছে। কয়েক দিন পর জানতে পারবেন। ভারতের ব্যাপারে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা অবহিত আছেন। এত বিস্তারিত বলা যাবে না। আমি নিজে ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি’। বাইরে আপনারা যত শুনেন কী হয়ে যাচ্ছে ও হয়েছে, কিছু কিছু তো বক্তব্য আসে, এগুলো তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। আপনারা তো আবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চান।’

দেশে ভারতবিরোধী প্রচার সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘এগুলো যারা বলছে তারা আমাদের জন্য (সম্পর্ক) জটিল করে ফেলছে। এগুলো তো আমাদের জাতীয় মনোভাব না। আপনি, আমরা কেউই চাই না। পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে, কোনো দেশের সঙ্গে এগুলো চাই না।’

এটি বন্ধ করার জন্য সরকার কী কোনো উদ্যোগ নিয়েছে- জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সবই কি বন্ধ করা যায়? একজন দাঁড়িয়ে বলে দিলো, সেটাকে আপনি কীভাবে থামাবেন।’

প্রধান উপদেষ্টার বন্ধু-বান্ধব ও অন্য দেশ, যাদের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তাদের মাধ্যমে তার কথা হয়েছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত একেবারে হস্তক্ষেপ করে না জানিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, হয়তো কিছু কিছু বক্তব্য রাখে। বাংলাদেশও সেটি রাখে। তবে তারা চেষ্টা করছেন কোনোভাবে যেন অস্বাভাবিক কিছু না হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বলছি, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা কিন্তু আঞ্চলিকতায় বিশ্বাস করি। ভারত এক বড় প্রতিবেশী। ভুটানের সঙ্গে কথা হলো, নেপালের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক, আর পাকিস্তান আস্তে আস্তে সম্পর্ক করছে। আমরা শুধু বাংলাদেশ নিয়ে তো থাকতে পারবো না। অর্থনীতি, স্বাস্থ্য সব ব্যাপারে তো ভারতকে সবচেয়ে বেশি আমরা পাই।’

এমএএস/একিউএফ/এমএস