খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকে। এ রাতে খ্রিস্টজাগ অর্পণের মধ্য দিয়ে প্রার্থনা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শুরু হবে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) প্রত্যুষে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ প্রার্থনা। এ সময় দেশ, জাতি ও বিশ্বের মানুষের শান্তি ও মুক্তির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবেন খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মেহেরপুর জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলায় মোট ২৯টি গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।
মেহেরপুর মুজিবনগর আনন্দবাস গ্রামের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী প্রশান্ত কুমার জানান, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বড়দিনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। প্রতিটি বাড়িতে স্টার তোলা হয়েছে, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধর্মীয় আচার সম্পন্নের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ।
তিনি বলেন, বড়দিন আমাদের জন্য শুধু উৎসব নয়, এটি শান্তি, ভালোবাসা ও মানবতার শিক্ষা দেয়। বছরের শেষ দিন পর্যন্ত আমরা আনন্দ ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সময় কাটাই।
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর ইম্মান্যুয়েল চার্চ কমিটির সদস্য বাবুল মল্লিক জানান, বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টানরা নিজ নিজ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য বিশেষ প্রার্থনায় থাকবে। দিনটি উপলক্ষে প্রতিটি গির্জার আশপাশে বসবে মেলা। এসব মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবার, খেলনা ও ধর্মীয় সামগ্রী বিক্রি হবে।
ভবেরপাড়া ক্যাথলিক চার্চের ফাদার তাপস হালদার জানান, ২৪ ডিসেম্বর রাতেই বড়দিনের প্রার্থনা শুরু হবে। এরপর ২৫ ডিসেম্বর ভোরে বিশেষ প্রার্থনার মাধ্যমে দেশ ও জাতির শান্তি কামনা করা হবে। প্রার্থনার সময় পবিত্র বাইবেল পাঠ, মোমবাতি প্রজ্বলন এবং ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন করা হবে।
তিনি বলেন, যিশু খ্রিস্টের জন্ম আমাদের শিক্ষা দেয় ক্ষমা, ভালোবাসা ও ত্যাগের। আমরা সেই শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে ধারণ করতে চাই।
এদিকে বড়দিন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিনুর রহমান জানান, বড়দিনকে কেন্দ্র করে জেলায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি গির্জা ও খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিন উদযাপনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে।
আসিফ ইকবাল/এনএইচআর/এমএস