বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে ঢাকায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির নেতারা। ইতিমধ্যে এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ঢাকায় ঢুকে পড়েছে। ফলে নগরীর বেশির ভাগ আবাসিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজে কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। এদিকে যেগুলো ফাঁকা আছে, সেগুলোও বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতের মধ্যে বুকিং হয়ে যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হোটেলে জায়গা না পেয়ে এখন অনেকেই ঢাকায় বাস করা স্বজন ও আশপাশের মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের কাছে জায়গা খুঁজে নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট এলাকায় গণসংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে মহাখালী, গুলশান, বনানী ও উত্তরার হোটেলগুলোতে মানুষের চাপ বেশি বেড়েছে। এছাড়া বিএনপির পার্টি অফিস এলাকা কেন্দ্র করে কাকরাইল, পল্টন, আরামবাগ ও বিজয়নগর এলাকায় প্রচুর মানুষ হোটেলে অবস্থান করছে।
তবে দেখা গেছে, ভালোমানের হোটেলগুলোর চেয়ে এখন মাঝারি মানের হোটেলে মানুষের চাপ বেশি। আবার সিট সংকটকে পুঁজি করে অনেক হোটেলে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে বেশি।
উত্তরা এলাকার গ্র্যান্ড প্লাজা হোটেলের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান হাবিব জাগো নিউজকে বলেন, তারেক রহমান দেশে ফেরার পর তাকে সংবর্ধনা দিতে অনেকে ঢাকায় এসেছে। এখন আমাদের সব রুম ফুল। আমরা কোনো বাড়তি গেস্ট নিতে পারছি না।
বনানী থেকে চেয়ারম্যানবাড়ি পর্যন্ত বেশ কিছু হোটেলেও দেখা গেলো সিট সংকট। বনানী ইন গেস্ট হাউজের ম্যানেজার বকুল হোসেন বলেন, অনেক মানুষ গ্রামগঞ্জ থেকে এসে সিট চাচ্ছে। কিন্তু আমরা নিয়মিত গেস্টদেরই সিট দিতে পারছি না।
পল্টনের এশিয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসে রুম রয়েছে ৫৪টি। সেখানে গিয়ে কথা হয় ফ্রন্ট ডেস্ক অফিসার জমশেদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন ১০টি রুম খালি রয়েছে। আশা করছি সন্ধ্যার মধ্যে এগুলো বুকিং হয়ে যাবে।
ফকিরাপুল মোড়ে পাশাপাশি দুটি হোটেল মুন স্টার হোটেল ও ফাইভ স্টার। দুটি হোটেলেরই রিসিপশনে গিয়ে দেখা গেলো সিট খালি নেই। কর্তব্যরত ম্যানেজার বলছেন, তাদের হাউজ ফুল দুদিন ধরেই।
শুধু ফকিরাপুল ও আরামবাগ এলাকায় প্রায় ২০০ হোটেল রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশের এ অবস্থা বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
এদিকে ফকিরাপুল মোড়ে কথা হয় জয়পুরহাট থেকে আসা আব্দুল মাজেদ নামের এক বিএনপি কর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে কমলাপুরে এসে নেমে কয়েকটি হোটেল খুঁজে রুম পেয়েছি। সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন রুম না পেয়ে আত্মীয়দের বাসায় গেছেন।
ফকিরাপুলে কথা হলে মিনহাজুল নামের একজন অভিযোগ করেন, মানুষের চাপে এ এলাকার হোটেলগুলো ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঢাকা শহরে কতগুলো হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে এর কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। তবে এ সংখ্যা ৩ থেকে ৪ হাজার হতে পারে বলে ধারণা বাংলাদেশ হোটেল ও গেস্ট হাউজ ওনার অ্যাসোসিয়েশনের। এগুলোতে ৪ থেকে ৫ লাখ মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
বাংলাদেশ হোটেল ও গেস্ট হাউজ ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব জেমস বাবু হাজরা জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিনিয়ত ঢাকায় নতুন নতুন হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ হচ্ছে, বন্ধও হচ্ছে। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে সারাদেশে থাকার উপযোগী হোটেল ও গেস্ট হাউজের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি হবে। এরমধ্যে অর্ধেক ঢাকা ও চট্টগ্রামে বলে ধারণা করা হয়।
জেমস বাবু হাজরা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হোটেল ব্যবসা মন্দা ছিল। তারেক রহমানের ফেরা ও তার সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে এলাকাভিত্তিক অনেক হোটেল জমে উঠেছে।
এনএইচ/এমএমকে/এমএস