দেশজুড়ে

যশোরের ৬ আসনের মধ্যে তিনটিতেই বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন

যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিতেই প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বিএনপি। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের প্রার্থী পরিবর্তনের পর রাতে যশোর-১ (শার্শা) ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে।

যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ। এর ফলে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন থেকে বাদ পড়লেন। আর যশোর-১ (শার্শা) আসনে মনোনয়ন পেলেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন। ফলে এ আসনে বাদ পড়লেন প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি।

এর আগে বুধবার দুপুরে যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়। সেখানে প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া অ্যাডভোকেট শহীদ মোহাম্মদ ইকবালের পরিবর্তনে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের (একাংশ) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার পর গত দেড় মাস ধরে তিনি এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের মাধ্যমে শ্রাবণের পরিবর্তে আবুল হোসেন আজাদকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

মনোনয়নের বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! দল আমাকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে। দলের সব নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কেশবপুরবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থনে এই আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।’

এদিকে, নানা নাটকীয়তার পর যশোর-১ আসনে বিএনপি থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন। বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নুরুজ্জামান লিটন।

উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবুল হাসান জহির বলেন, দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি নুরুজ্জামান লিটনকে দেওয়া হয়েছে। এরপর দল থেকে তাকে প্রতীক দেওয়া হবে।

এই আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি এলাকায় ভোট চেয়ে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে আসছিলেন। তবে এই আসনে তার বিপরীতে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবুল হাসান জহির, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন ও সাবেক সভাপতি বর্তমান উপজেলা বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধু। শুরু থেকেই তারা সবাই বিএনপির মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তির বিরোধিতা করে প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে একাট্টা হয়ে কর্মসূচিও পালন করেছেন।

এর আগে বুধবার দুপুরে যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে হঠাৎ করে বিএনপির প্রার্থী বদল হয়ে যায়। এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয় বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের (একাংশ) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাস। এই আসনে প্রাথমিকভাবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল।

মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, মণিরামপুরে বিএনপির প্রার্থীর পরিবর্তে জোটের প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন। এটি তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মানতে পারছেন না। এজন্য তাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তাই তারা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সিদ্ধান্ত বদল না হলে নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম