প্রথমবারের মতো তাদের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনের ছবি প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক সাবমেরিন সহযোগিতার নতুন চুক্তির প্রেক্ষাপটে এ সাবমেরিন তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া। এই পদক্ষেপ কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন একটি ইনডোর নির্মাণ স্থাপনায় নির্মাণাধীন ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন পরিদর্শন করছেন। ছবিগুলো থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, সাবমেরিনটি এখনও নির্মাণাধীন এবং পানিতে নামানো হয়নি।
উত্তর কোরিয়ার এই পারমাণবিক শক্তিচালিত কৌশলগত সাবমেরিনটিতে একটি দীর্ঘায়িত সেল রয়েছে। এখানে সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ টিউব, ফ্ল্যাঙ্ক অ্যারে সোনার এবং ছয়টি টর্পেডো টিউব দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের উন্নত সাবমেরিন প্রচলিত ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিনের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর। এগুলো দীর্ঘ সময় পানির নিচে অবস্থান করতে পারে, গতি বেশি, শব্দ কম এবং বহু বছর ধরে অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা রাখে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবমেরিনটির স্থানচ্যুতি প্রায় ৮,৭০০ টন যা যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তিচালিত ভার্জিনিয়া-ক্লাস অ্যাটাক সাবমেরিনের সঙ্গে তুলনীয়। এতে এটি উত্তর কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী নৌ আক্রমণ সক্ষমতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ কিম জং উনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আমরা মনে করি, সুপার-পাওয়ারফুল আক্রমণ সক্ষমতাই জাতীয় নিরাপত্তার সর্বোত্তম ঢাল এবং সশস্ত্র বাহিনী উন্নয়নের মূল ভিত্তি।
এই সাবমেরিন সম্পন্ন হলে উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে এবং দেশটি পারমাণবিক সাবমেরিনধারী বৈশ্বিক শক্তিগুলোর কাতারে চলে আসবে। বর্তমানে এই প্রযুক্তি কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ভারত ও রাশিয়া ব্যবহার করে থাকে।
এদিকে কিম জং উন দক্ষিণ কোরিয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণ করে সিউল উত্তর কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন করছে এবং কোরীয় উপদ্বীপে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।
কেএম