স্বাস্থ্য

তামাক নিয়ন্ত্রণের সংশোধিত অধ্যাদেশের গেজেট অবিলম্বে প্রকাশের দাবি

‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। একই সঙ্গে সংগঠনটি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশোধিত অধ্যাদেশটি অবিলম্বে গেজেট আকারে প্রকাশের জোর দাবি জানিয়েছে।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার এখনো অন্যতম বড় জনস্বাস্থ্য সংকট। হৃদরোগ, ক্যানসার, স্ট্রোক ও দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ তামাকজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে প্রতিবছর দেশে এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। পাশাপাশি দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ এখনো তামাক ব্যবহার করছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে হার্ট ফাউন্ডেশন জানায়, তামাক ব্যবহার ও উৎপাদনের ফলে প্রতিবছর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্বের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এ বিপুল ক্ষতি ব্যক্তি, পরিবার ও জাতীয় অর্থনীতির ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।

এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তামাক নিয়ন্ত্রণের সংশোধিত অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়াকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করেছে হার্ট ফাউন্ডেশন।

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক রিজভী বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন। সংশোধিত আইন দ্রুত কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশে তামাকজনিত অসংক্রামক রোগ ও অকাল মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। একই সঙ্গে এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) তিন নম্বর লক্ষ্য, বিশেষ করে লক্ষ্যমাত্রা ৩(ক)- অসংক্রামক রোগজনিত অকাল মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস- অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

হার্ট ফাউন্ডেশন আশা প্রকাশ করে, সরকার জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সংশোধিত অধ্যাদেশটি দ্রুত গেজেটভুক্ত করবে এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

সংশোধিত অধ্যাদেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ই-সিগারেটসহ সব ধরনের নবউদ্ভূত তামাক পণ্যের ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব এবং নিকোটিন পাউচকে তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে সব ধরনের তামাক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার বিষয়টি সরকারের নির্দেশনার ওপর নির্ভরশীল করা হয়েছে এবং এসব স্থানের সংজ্ঞা ও পরিধি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিক্রয়স্থলে প্রদর্শনসহ সব ধরনের তামাক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ এবং প্যাকেটে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

এসইউজে/একিউএফ/এমএস