দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং রাশিয়াপন্থিদের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই আগামী জানুয়ারিতে ইউরো মুদ্রা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বুলগেরিয়া। ৬৫ লাখ জনসংখ্যার এই বলকান দেশটি ১ জানুয়ারি ইউরোজোনে যোগ দিয়ে ২১তম সদস্য রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
ব্রাসেলস ও সোফিয়ার নীতিনির্ধারকেরা আশা করছেন, ইউরো গ্রহণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে দরিদ্র সদস্য রাষ্ট্র বুলগেরিয়ার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং দেশটির পশ্চিমাপন্থি অবস্থান আরও দৃঢ় করবে।
সরকারি প্রচারণা সত্ত্বেও ইউরো গ্রহণ নিয়ে বুলগেরিয়ার জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিভাজন রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ নাগরিক ইউরো গ্রহণের পক্ষে থাকলেও ৪৫ শতাংশ এর বিপক্ষে। ইউরোপীয় কমিশন ইউরো গ্রহণে অনুমোদন দেওয়ার পর গত জুনে সংসদে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। রাশিয়াপন্থি ও কট্টর ডানপন্থি দল ‘রিভাইভাল’-এর সংসদ সদস্যরা সংসদের কার্যক্রমে বাধা দেন।
এদিকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন বলেছেন, ইউরোর কারণে বুলগেরিয়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে এবং উন্নতমানের কর্মসংস্থান ও প্রকৃত আয় সৃষ্টি হবে।সফিয়া সফরে ইউরোপীয় কমিশনের অর্থনীতি বিষয়ক কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ, বাড়তে থাকা ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ইউরো গ্রহণ ইউরোপীয় ঐক্যের গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, বুলগেরিয়াসহ অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশ একা বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করার জন্য খুবই ছোট। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর সঙ্গে পুরোপুরি একীভূত হলেই তারা প্রয়োজনীয় শক্তি অর্জন করতে পারে।
সোফিয়াভিত্তিক থিংকট্যাংক ‘ইনস্টিটিউট অব মার্কেট ইকোনমিক্স’-এর জ্যেষ্ঠ গবেষক পেতার গ্যানেভ বলেন, ইউরো নিয়ে বিভাজন দেশটির সামগ্রিক রাজনৈতিক উত্তেজনারই প্রতিফলন। তবে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাশিয়া-সংযুক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নেটওয়ার্ক ইউরো বিরোধী মনোভাব উসকে দিতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
কেএম