রাজনীতি

বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াতসহ ৮ দলের সঙ্গে নির্বাচন করবো

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য ও বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াতসহ সমমনা আট দলের সঙ্গে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল (২৯ ডিসেম্বর) চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার চক্রান্ত চলছে। এই জুলাই প্রজন্মকে নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তারা চক্রান্ত করছে। সেদিন ওসমান হাদির গায়ে গুলি লেগেছে। কালকে আপনার গায়ে লাগবে, পরশুদিন আমার গায়ে লাগবে। কারণ প্রথম এবং প্রধান টার্গেট করা হচ্ছে এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা অংশগ্রহণ করেছে। এই মুহূর্তে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য, প্রতিযোগিতাপূর্ণ করার জন্য এবং আধিপত্যবাদী কোনো শক্তি আমাদের এই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অগ্রযাত্রাকে যাতে ঠেকাতে না পারে সেজন্য আমাদের বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন। সেই তাগিদ থেকেই আমরা জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের যে সমমনা আট দল রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের নির্বাচনী সমঝোতায় জাতীয় নাগরিক পার্টি সম্মত হয়েছে। আট দলের সঙ্গে আমরা একত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটে অংশ নেওয়ার জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা করে যাচ্ছিল। আমরা সে বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি যে, আমরা আসন্ন এই নির্বাচনে এককভাবে অংশগ্রহণ করতে চাই। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চাই। সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা চলছিল। আমরা সারাদেশ থেকে মনোনয়ন আহ্বান করেছিলাম। যারা প্রার্থী হতে চায়। পরবর্তীতে আরও দুইটি দলের সঙ্গে আমাদের একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছিল। সংস্কার প্রশ্নে তখন আমরা বলেছিলাম যে, আমরা তিনটি দল মিলে যে সংস্কার জোট আমরা একত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

তিনি আরও বলেন, শরিফ ওসমান হাদিকে প্রকাশ্যে গুলি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনেক বেশি পরিবর্তন হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড, এই শাহাদাত বরণের মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারছি, বাংলাদেশে আধিপত্যবাদী আগ্রাসী শক্তি এখনো কার্যকর রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যাদের আমরা পরাজিত করেছিলাম তারা নির্বাচন বানচাল করার জন্য এখনো চক্রান্ত করছে।

জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১০ দলের জোটকে নির্বাচনি জোট দাবি করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটি নির্বাচনি সমঝোতা জোট। একদিকে যেমন নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার জন্য, অন্যদিকে প্রথম থেকে সংস্কার ও বিচারের প্রশ্নে আমরা কাজ করে যাচ্ছিলাম। সেই সংস্কার, বিচার এবং আধিপত্যবাদ বিরোধী, দুর্নীতিবিরোধী এই বিষয়গুলোতে আমাদের ন্যূনতম কর্মসূচিও থাকবে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের যে সংকটগুলো রয়েছে, সেখান থেকে এই বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। জুলাই প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, এজন্য আমরা একটা বৃহত্তর ঐক্যের জায়গায় পৌঁছেছি।

তিনি বলেন, আমরা আগামীকাল (২৯ ডিসেম্বর) আমাদের প্রার্থীর বিষয়টা আছে, সেটা আমরা চূড়ান্তভাবে ঘোষণা দেব। সমঝোতায় আমাদের যে প্রার্থী তারাই নমিনেশন ফর্ম (মনোনয়নপত্র) জমা দেবেন। সারা বাংলাদেশে আমরা একত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং তাদের সহযোগী সংগঠন গণভোটের পক্ষে ক্যাম্পেইন করবে। যেখানে আমাদের প্রার্থী থাকবে না সেখানে অন্য প্রার্থী থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এনএস/এমএমকে

এনএস/এমএমকে/এমএস