শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল খুনি ও সহযোগীদের গ্রেফতার করে ২৫ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্নের দাবি জানিয়েছে সংগঠন মঞ্চ-২৪।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটি জানায়, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই রাষ্ট্রের জনগণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজনে নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করে না।
বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার মহা বিপ্লবের অন্যতম ধারক সাহসী তরুণ নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদি দিল্লির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। বিচার ও ইনসাফের লড়াই করা এই নেতা আজ নিজেই বিচার থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ করা হয়।
মঞ্চ-২৪ দাবি করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি দিল্লির পরামর্শ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশে একের পর এক তরুণ নেতৃত্বকে হারাতে হবে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি গভীর রাষ্ট্রীয় সংকেত বলে উল্লেখ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আবু সাঈদ ও ওয়াসিমদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের চেতনা উপেক্ষা করে এই সরকারের টিকে থাকার কোনো নৈতিক বা রাজনৈতিক যৌক্তিকতা নেই।
সংগঠনটি অভিযোগ করে, এখনো পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করার কোনো দৃশ্যমান ও ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এ নীরবতা জনগণের মধ্যে গভীর প্রশ্ন ও অনাস্থা তৈরি করছে।
নির্বাচনের আগে গোয়েন্দা সংস্থার ভেতর অবস্থানরত ভারতীয় এজেন্টদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা না গেলে কোনো সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও দাবি করা হয়। পাশাপাশি, আওয়ামী লীগ ও ভারতের মদদপুষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নে জড়িত গণমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এ অবস্থায় মঞ্চ-২৪ চার দফা দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যার মূল খুনি ও সম্পূর্ণ সহযোগী চক্রকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে ২৫ দিনের মধ্যে বিচারকার্য শেষ করা, নির্বাচনের আগে গোয়েন্দা সংস্থার কাঠামোগত সংস্কার ও সেখানে অবস্থানরত সব ভারতীয় গুপ্তচরকে চিহ্নিত করা, গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা দেশবিরোধী ও বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিট পুনর্মূল্যায়ন করে বাতিল করা।
এছাড়া, ভারত আশ্রয় নেওয়া খুনিদের ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দাবিও জানানো হয়।
এফএআর/এএমএ/এমএস