ক্যাম্পাস

জাবিতে ভিক্ষুকদের অবাধ বিচরণে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভিক্ষুকদের অবাধ বিচরণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের টিএসসি, কাফেটেরিয়া ও বটের মতো জনাকীর্ণ স্থান ছাড়িয়ে অ্যাকাডেমিক ভবনেও তাদের আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিন অসংখ্য ভিক্ষুক দলবেঁধে এসে বিরক্ত করছে। অনেক সময় একাধিকবার ‘না’ করার পরেও তারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের বড় অংশই মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান, যারা টিউশনি বা পরিবারের সামান্য টাকার ওপর নির্ভরশীল। একের অধিক ভিক্ষুককে প্রতিদিন সহায়তা করা তাদের জন্য যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি বারবার সাহায্য চাওয়ায় তারা বিভ্রান্তিতে পড়ছেন।

ক্যাম্পাসের টিএসসির কাফেটেরিয়া সংলগ্ন স্থানে টিউশনি পড়ানো এক শিক্ষার্থী জানান, সাধারণত বিকালে স্টুডেন্টদের পড়াই। পড়ানোর সময় ভিক্ষুকদের জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। নিষেধ করা সত্ত্বেও দাঁড়িয়ে থাকাসহ বারবার ভিক্ষা চেতে আসায় স্টুডেন্টদের সামনে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। এক দুইজন হলেও সাহায্য করা যায়, তবে তারা যেমন দলবেঁধে থাকে।

আরেক শিক্ষার্থী জানায়, সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিকে যেমন বহিরাগতদের চলাচলে অতিষ্ঠ তেমনি ভিক্ষুকদের বিচরণেও। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হোক বা বট তলায় খেতে যাওয়া- সব জায়গাতেই তাদের উপস্থিতি অতিরিক্ত। কখনো কখনো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় ও তাদের জন্য বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।

এছাড়াও ভিক্ষুক নামে অনেকেই প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। এ সমস্যা সমাধানে একটি বিশেষ টিম গঠন করে জাবিতে ভিক্ষা চাওয়া ভিক্ষুকদের তালিকা করা যেতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। এনআইডি ও অন্যান্য কাগজপত্রের মাধ্যমে ডিসি ও জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে যারা আসলেই ভিক্ষুক তাদের শনাক্ত করা যেতে পারে।

এছাড়াও প্রয়োজনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহায়তায় জাবিতে ভিক্ষা চাওয়া ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান বলেন, ভর্তি পরীক্ষা চলমান থাকায় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আগমন অনেক, চাইলেও তা বন্ধ করা যাবে না। ভর্তি পরীক্ষার পরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপত্তা কর্মীদেরও দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলমের একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

মো. রকিব হাসান প্রান্ত/কেএইচকে/এমএস