সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রেসবক্স থেকে গ্রিন গ্যালারির দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছিল, কুয়াশার তীব্রতা কতটা বেশি। প্রেসবক্সের বাইরে দাঁড়িয়ে নিচের দিকে তাকালে প্রথমে মনে হতে পারে, একটু আগেই বুঝি বৃষ্টি হয়েছে। তবে ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, সেটি বৃষ্টি নয়, ‘বৃষ্টির মতো’ গুড়ি গুড়ি কুয়াশা। যেন বরফখণ্ডগুলো গলে গলে পড়ছে। এর সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস, ফলে তৈরি হয়েছে হাড়কাঁপানো শীত।
গত কয়েক দিন ধরেই সারা দেশে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকলেও সোমবার যেন তা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই শীতের প্রভাব পড়েছে বিপিএলের ম্যাচেও। প্রথম দু’দিনে যেখানে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শক ঠাসা ছিল, সেখানে সোমবার বিপিএলের দ্বাদশ আসরের তৃতীয় দিনে গ্যালারির বেশিরভাগ অংশই ছিল ফাঁকা।
গত ২৬ ডিসেম্বর মাঠে গড়ায় বিপিএলের দ্বাদশ আসর। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আনুষ্ঠানিক দর্শক ধারণক্ষমতা ১৭ হাজার ৪০০। যদিও গ্রিন গ্যালারিতে দর্শকসংখ্যা কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। এবারের বিপিএলের প্রথম দিনে সিলেটে উপস্থিত দর্শকসংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৮৮৪ জন।
দ্বিতীয় দিনে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন ১৭ হাজার ১৬৪ জন। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে দর্শক ছিলেন, মাত্র দুই হাজারের মতো। বিকেল থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে এই সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও তা সাড়ে তিন হাজার ছাড়ায়নি।
প্রাথমিকভাবে মনে হতে পারে, স্বাগতিক সিলেটের খেলা না থাকায় দর্শকসংখ্যা কমেছে। তবে স্থানীয়দের মতে, শুধু এটিই কারণ নয়। তাদের ধারণা, এমন তীব্র শীতে মাঠে বসে খেলা দেখা সত্যিই কষ্টকর।
একিউ ওয়েদারের তথ্য অনুযায়ী, স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। বাতাসের গতিও ছিল ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটারের বেশি। ফলে বিরূপ আবহাওয়া তৈরি হয়। গ্যালারির এক পাশে ছাদ থাকলেও বেশিরভাগ অংশ খোলা, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দেয়।
২৮ বছর বয়সী স্থানীয় দর্শক তৈয়ব আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘যে পরিমাণ শীত আর বাতাস, তাতে এখানে বসে খেলা দেখা সত্যিই কষ্টকর। তবুও ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এখনও বসে আছি।’
সিলেটের বিখ্যাত গ্রিন গ্যালারিতে সোমবার দর্শকসংখ্যা ছিল হাতেগোনা, ৫০ ছুঁইছুঁই। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অনেক দর্শকই শীতে কাঁপছেন। গ্রিন গ্যালারির পাশে থাকা দুটি খেজুর গাছ ঠান্ডা বাতাসের গতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
২২ বছর বয়সী দর্শক আকাশ সেন বলেন, ‘আজ সিলেটের খেলা নেই, তার ওপর এত শীত। এ কারণেই দর্শকসংখ্যা এত কম।’
শীতের প্রভাব পড়েছে মাঠের খেলাতেও। দিনের কোনো ম্যাচেই বড় রান হয়নি। প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম দলকে মাত্র ১০২ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮ উইকেটে জয় পায় রংপুর রাইডার্স। পরের ম্যাচে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের ইনিংস থামে ১৮৪ রানে।
এসকেডি/আইএইচএস/