জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ঢাকা ধর্মঘট কর্মসূচির কারণে টানা চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিল পুরান ঢাকা। রোববার সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ফলে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরান ঢাকা।পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল করে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। পরে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে লক্ষ্মীবাজার মোড়ের দিকে গেলে সেখানে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। শিক্ষার্থীরা বাধা অতিক্রম করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে অনিমেষ রায়, ঝুমুর, মুনিয়া নামের তিন শিক্ষার্থীর নাম জানা গেছে।অন্যদিকে, যে কোনো অরাজাকতা রোধে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নের পাশাপাশি রায়েরসাহেব বাজারের ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। ফলে রায সাহেব বাজার সংলগ্ন সব রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় চরম জনদুর্ভোগের। এ সময় রায়েরসাহেব বাজার মোড় থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেককে হেটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।সুমন নামরে এক ফেরিওয়ালা বলেন, ভাবলাম খুব সকালে বাসা থেকে বের হই, যাতে দ্রুত ব্যাগের মাল ডেলিভারি দিতে পারি। ব্যাগে পুথির কারুকাজ করা গলার হার রয়েছে। যা তিনি পুরান ঢাকার বিভিন্ন দোকানে দোকানে পাইকারি বিক্রি করনে বলেও জানান।আশিকুর রহমান দুলাল নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, এই বৃষ্টির মধ্যে কিভাবে হেটে সদরঘাটে যাবো। বৃষ্টির মধ্যে হেটেও যেতে পারছি না, আবার রিকশাও নিতে পারছি না।চার মাস বয়সী সন্তানসহ রুমানা নামের এক মা’কে বৃষ্টির মাঝে রায়ের সাহেব বাজারে এক দোকানের ছাউনিতে বসে থাকতে দেখা যায়। জানতে চাইলে উল্টো প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘এত পুলিশ কেন এখানে। পুলিশ আমার রিকশা থামিয়ে দিয়েছে। আমি আমার বাচ্চাকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার দেখাবো বলে এসেছি। এখনও তো যেতে পারছি না’পরে তাকে এক পুলিশ সদস্য রায়েরসাহেব বাজার থেকে বিকল্প রাস্তায় ওই মাকে এগিয়ে নিয়ে যান।লালবাগ জোনের ডিসি ইব্রহীম খান বলেন, শিক্ষার্থীদের হল দাবির আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল থাকবে না, তা তো হতে পারে না। কিন্তু এ আন্দোলন একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে এবং শান্তিপূর্ণ হতে হবে।তিনি আরো বলেন, জনদুর্ভোগ হয় এমন কোন কর্মসূচি দেয়া যাবে না। শিক্ষার্থীদের তাতীবাজার এবং পল্টন মোর অবরোধের দিন সাধারণ জনগণের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। এ ব্যাপারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ আছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো যেন তারা ক্যাম্পাসের ভেতরে থেকেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে।এসএম/আরএস/আরআইপি