হালকা কুয়াশায় সূর্যের চকচকে আলো গিয়ে পড়ছে গাছে। মাঝে মধ্যে যোগ দিচ্ছে মৃদু বাতাস। দোল খেতে খেতে সেই ফল-পাতা যেন মুহূর্তের মধ্যে রূপ নিচ্ছে সোনালী রঙে, আবার মিশে যাচ্ছে সবুজে। সুস্বাদ ও রসাল ফলটি কমলা। দৃষ্টি কাড়ছে সবার।লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের কমলা গ্রাম নামে পরিচিত পশ্চিম সারডুবি। এ গ্রামের প্রতিটি পরিবারই কমলা বাগান ও গাছ লাগিয়ে ভাগ্য বদল করেছে। সরেজমিনে ওই গ্রামে গেলেই চোখে পড়ে কমলা চাষের সাফল্য।উপজেলার পশ্চিম সারডুবি গ্রামে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুনের কমলা বাগান থেকে চারা সংগ্রহ করে গত ৪ বছর আগে বাড়ির আঙ্গিনায় একটি কমলা চারা লাগান দিনমজুর আব্দুল রাজ্জাক (২৮)। গত বছরে গাছে কম কমলা আসলেও এ বছর কমলা এসেছে প্রচুর। তাই দেখে আনন্দের শেষ নেই তার পরিবারে। ঘরের চালে দুলছে কমলা, চোখে পড়লে মন জুড়িয়ে যায়। একটি কমলা গাছ দিয়ে তার পুরো সংসারের খরচ চলছে। ভারত বা ভুটানের কমলার মতই সুস্বাদ ও রসাল এ কমলাগুলো।দিনমজুর আব্দুল রাজ্জাক জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছি। কমলা বিক্রি করে তেমন লাভ না হলেও কমলা খেয়ে বীজ সংগ্রহ করে তা চারা করে বিক্রয় করলে প্রচুর টাকা আয় হয়। প্রতি চারা বিক্রয় করছি ৫০ থেকে ১শ টাকা করে।আব্দুল রাজ্জাকের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (২২) জানান, কমলা বাজারে বিক্রি করতে হয় না, বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়ে যায়। প্রতিদিন কমলা খেতে অনেকেই বাড়িতে আসেন।হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনোয়ার হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক দম্পতির পাশাপাশি সবাই এখন কমলাচাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ওই অঞ্চলের বেলে-দোঁয়াশ সমতল মাটিতে কমলাচাষ ব্যাপক সাফল্য আনতে পারে। কেউ বাগান গড়ে তুলতে চাইলে কৃষি বিভাগ তার পাশে থাকবে বলেও তিনি জানান।রবিউল হাসান/এফএ/এমএস