মানিকগঞ্জের ঝিটকা থেকে চুড়ি আর আলতা কিনতে এসেছেন আশরাফুল ইসলাম। গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন চুড়ি, আলতা, ফিতাসহ হরেক রকম গহনা।
রমজান শুরুর আগে একবার মালামাল খরিদ করতে এসেছিলেন। সে মাল প্রায় ফুরানোর পথে। ঈদ বাজার ধরতেই প্রায় ৭০ হাজার টাকার মাল কিনতে এসেছেন কেরানীগঞ্জে।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, ২০ বছর ধরে ফেরি করছি। মাল কিনি কেরানীগঞ্জ থেকে। বাড়ির কাছে বাজারে একটি ছোট দোকানও আছে। ছেলের মা বসে দোকানে। আমি ফেরি করি। চুড়ির ব্যবসাই ভাগ্য ফিরিয়েছি।
আশরাফুলের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন পাশেই মোহিন নামের আরেক ক্রেতা চুড়ি আর ফিতা বাছাই করছিলেন। মোহিন এসেছেন নবীনগর নয়ারহাট থেকে। নয়ারহাটেই কসমেটিক্সের দোকান তার। আগে চুড়ির দোকানই ছিল। দু’বছর আগে দোকানের পরিধি বাড়িয়েছেন।
মোহিন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকেই তো সব মাল কেনা হয়। এখানে যে দরে মাল কেনা যায়, তা অন্য কোথাও মেলে না।’
ঈদ উপলক্ষে চুড়ি, ফিতা আর আলতার দোকানে সেজেছে কেরানীগঞ্জ। শত শত চুড়ির পাইকারি দোকানে এখন চুড়ি-ফিতা আর আলতা বেচা-কেনার ধুম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দোকানদাররা এখানে সস্তা দরের এসব পণ্য কিনতে আসছেন। মূলত ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করেই জমে উঠেছে কেরানীগঞ্জের গহনার বাজার।
তবে শুধু পাইকাররাই নয়, খুচরাও বিক্রি হচ্ছে ধুম। যাত্রাবাড়ী থেকে রাহেলা বেগম এসেছেন তার ভাতিজিদের নিয়ে চুড়ি কিনতে। হাজার টাকার চুড়ি কিনবেন বলেই নদী পার হয়ে এ পাড়ে আসা।
বলেন, এখানে তো চুড়ির আড়ত। বাছাই করে কেনা যায়। মন ভরে পছন্দ করা যায়। দামও সস্তা।
কথা হয় চুড়ি বিক্রেতা জহুরুল হকের সঙ্গে। বিভিন্ন মেলায় চুড়ির দোকান দেন জহুরুল। রমজান মাস কেরানীগঞ্জেই অস্থায়ী ব্যবসা করেন। বলেন, এখানে ১১ বছর ধরে দোকান দেই। খুচরার সঙ্গে পাইকারিও বিক্রি করি। আমার দোকানের সব ফ্যাক্টরি তো এখানেই।
এবার কেমন বিক্রি হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাইকারি বিক্রি হচ্ছে বেশ, তবে খুচরা বাজার এখনও জমে ওঠেনি।
কথা হয় ‘মান্নান এন্টারপ্রাইজ’র মালিক আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। নিজের ফ্যাক্টরিতে তৈরি করা চুড়ি বিক্রি করেন তিনি। বলেন, ঈদ বাজারে ৩০ লাখ টাকার চুড়ি বিক্রির টার্গেট নিয়েছি। গতবারও তাই হয়েছে। ফ্যাক্টরি, দোকান মিলে ২০-২২ জন শ্রমিক খাটে। এখন মৌসুম। বিক্রি তো করতেই হইব। নইলে শ্রমিকগো বেতন-বোনাস দেব কেমনে?
এএসএস/এআরএস/এমএআর/আরআইপি