দেশজুড়ে

রাস্তাটি আসলে কার?

ভৈরবে জিল্লুর রহমান বাঁধ রোডের রাস্তার বেহাল অবস্থায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে হাজারও মানুষসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটিতে দীর্ঘদিন যাবত ভাঙাচোরা ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মানুষ ও যান চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি।

বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরা রাস্তাটির এখন করুণ অবস্থা। রাস্তাটির মেরামত নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো নজরও নেই। কারণ রাস্তাটির মালিকানা নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। আর অভিভাবক না থাকায় রাস্তাটি কে মেরামত করবে এই জটিলতায় মেরামতও করা হচ্ছে না।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান জীবিত থাকাকালে ভৈরব শহরের গুরুত্ব বিবেচনা করে নিজ উদ্যেগে ৭০০ মিটারের এই রাস্তাটি নতুনভাবে নির্মাণ করান। বর্তমানে শহরে মালামাল নিয়ে যানবাহন প্রবেশের প্রধান রাস্তা এই রোডটি। শুধু তাই নয় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে থাকে।

জানা গেছে, ৭০০ মিটারের এ রাস্তাটি বিগত ২০১২ সালের ১৬ জুন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের নামে নামকরণ করে ভৈরব বাজার নদীর পাড়ে বাগানবাড়ী এলাকায় নুতনভাবে উদ্বোধন করা হয়। তৎকালীন সময়ে রাস্তাটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন।

আগে এই রাস্তাটিতে রেলওয়ে মালগুদামের রেললাইন ছিল। রেলওয়ে ওয়াগনে মালামাল পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়াই রেল কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি অকেজো ঘোষণা করে রেললাইন তুলে নেয়। পরে জিল্লুর রহমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ভৈরব শহর রক্ষা বাধের কাজের সঙ্গে রাস্তাটি অন্তর্ভুক্ত করেন।

তখন মজবুত করে পিচঢালাইয়ের মাধ্যমে রাস্তাটি করলেও পরে রেল কর্তৃপক্ষ নুতন রেলসেতু করতে গিয়ে রাস্তাটির স্থান পরিবর্তন করে কিছুটা পশ্চিমে নিয়ে যায়। এতে করে রাস্তাটি ভাঙতে থাকে এবং সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটির করুন অবস্থার সৃষ্টি হয়।

গত তিন বছরে এই রাস্তাটিতে কমপক্ষে ২০/২৫টি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বড় বড় গর্তের সংখ্যা ৫/৭টি। এসব গর্তের কারণে ট্রাক, ট্রাক্টর, সিএনজি, প্রাইভেট কারসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

কবে রাস্তা মেরামত হবে বা কে মেরামত করবে এই নিয়ে দুই কর্তৃপক্ষের মধ্য চলছে বিরোধ। ভৈরবের ভুক্তভোগিরা রাস্তাটির মালিকানা ঠিক করে জনস্বার্থে রাস্তাটি অবিলম্বে মেরামতের দাবি জানিয়েছে।

এ ব্যপারে ভৈরব পৌর মেয়র অ্যাড. ফখরুল আলম আক্কাছ জানান, এই রাস্তাটির মালিক পৌরসভা নয়। রেলওয়ের ভূমিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাস্তাটি নির্মাণ করেছে। কাজেই রেলওয়ের অনুমোদন ছাড়া পৌরসভা রাস্তাটি মেরামত করতে পারে না। এছাড়া বিশাল রাস্তাটি মেরামত করতে অনেক টাকা বাজেট প্রয়োজন যা পৌরসভার তহবিল থেকে দেয়া সম্ভব নয়।

রেলওয়ে ভৈরবের সহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, এই রাস্তাটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ করেনি তাই রাস্তার কথা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অজানা রয়েছে। তবে পৌরসভা রাস্তাটি মেরামত করতে পারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রাস্তা মেরামতে বাধা দিবে না।

আসাদুজ্জামান ফারুক/এফএ/পিআর