অবশেষে রাজধানীর মৌচাক-মালিবাগ সমন্বিত উড়াল সড়কের মূল নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত এ উড়াল সড়কটি এখন যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি খুলে দেয়ার অপেক্ষায়। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই উড়াল সড়কের মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার অংশ খুলে দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। এ অংশে এখন চলছে ধোয়ামোছা, রঙ, বিদ্যুতের খুঁটি ও বাতি লাগানোর কাজ।
ওই উড়াল সড়কটি তিন ভাগে করা হয়েছে। এর আগে সড়কটির অপর দুই ভাগ খুলে দেয়া হয়।
রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় উড়াল সড়কের এ অংশের দুই পাশে দেয়ালে সাদা রঙ এবং লোহার পাইপে লাল রঙ করা শেষ হয়েছে। এছাড়া উড়াল সড়কের সবকটি খুঁটির সংযোগ কাজও শেষ। রোববার উড়াল সড়কে ১৫-২০ জন শ্রমিক শেষ সময়ের কাজ করছিলেন, তাদের মধ্যে একজন হাফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা ধোয়ামোছা এবং শেষ সময়ের রঙের কাজ করছি। এছাড়া নিরাপত্তাকর্মীরা নিয়োজিত আছেন।
এখন চলছে ধোয়ামোছা, রঙ, বিদ্যুতের খুঁটি ও বাতি লাগানোর কাজ
উড়াল সড়কটির বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও এই প্রকল্পের পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, জুন মাসে উড়াল সড়কের মূল অংশের কাজ (মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার) শেষ হয়েছে। এখন ধোয়ামোছার কাজ চলছে, সেটাও শেষ পর্যায়ে। উদ্বোধনের নির্দিষ্ট তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তবে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন এটি যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হবে। এ মাসের মাঝামাঝিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিন সময় দেবেন সেদিন এর উদ্বোধন করা হবে।
এ উড়াল সড়কের নিচের রাস্তা দিয়ে বাসে প্রতিদিন পল্টনে অফিসে যান মাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, উড়াল সড়কের কাজের জন্য দীর্ঘদিন আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অবশেষে সড়কটি খুলে দেয়ার কথা শুনছি। এখন এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটবে বলে মনে করি। সেই সঙ্গে নিচের রাস্তাও দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা জরুরি।
দেশে এখন পর্যন্ত যে কয়টি উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে তার মধ্যে এই উড়াল সড়কটি দৈর্ঘ্যের দিক দিয়ে দ্বিতীয়। প্রথম স্থানে আছে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়াল সড়ক (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী)।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর ধোয়ামোছা চলছে
এর আগে মৌচাক-মালিবাগ সমন্বিত উড়াল সড়কের অপর দুই অংশ খুলে দেয়া হয়। এর মধ্যে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, নিউ ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত খুলে দেয়া হয়। এরপরের ধাপে এ বছরের গত ১৭ মে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) মোড় থেকে কারওয়ানবাজার অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার অংশ খুলে দেয়া হবে।
২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় নয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই উড়াল সড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
এএস/জেডএ/আইআই