দেশজুড়ে

নিজ পায়ে যদি ২৫ সেকেন্ডের জন্য দাঁড়াতে পারতাম

জীবনে যদি একবারের জন্য হলেও নিজ পায়ে ২৫ সেকেন্ডের জন্য দাঁড়াতে পারতাম, খুবই তৃপ্তি পেতাম। চারপাশে কত মানুষ সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছে, আমি আমার দিন কাটছে বসে বসে। জাগো নিউজের এই প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই নিজের আফসোসের কথাগুলো বলছিলেন ভিক্ষুক জসিম উদ্দিন (২৫)।

জসিমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হলেও ২০ বছর যাবৎ সপরিবারে বাস করছেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের গুজারাই গ্রামে।

ভিক্ষা করে পড়ে ২শ’ টাকা আয় হয় জসিমের। বাবা-মা আর ছোট দুই ভাইকে নিয়েই তার সংসার। ভিক্ষার টাকায় চলে তাদের সংসার। বৃদ্ধ বাবা মাঝে মধ্যে দিনমজুরের কাজ করেন, কিন্তু তাতে সংসার চলে না। বাধ্য হয়েই ভিক্ষায় নেমেছেন জসিম। ছোট দুই ভাইয়ের একজনের বয়স ১৪, আরেকজনের ১২ বছর। সংসারের অভাব ঘোচাতে তারাও চায়ের দোকানে কাজ করে।

জসিমের ইচ্ছে ছিল ভিক্ষা করে হলেও ভাইদের পড়াবেন। তারা একদিন চাকরি করে বড় লোক হবে ভাইকে সাহায্য করবে। কিন্তু অভাবের কারণে তাদের লেখাপড়া করাতে পারেননি জসিম। স্কুলের সামনে যখন ভিক্ষা করেন তখন ছাত্রদের দেখে খুব আফসোস হয় তার।

জসিম জানান, ৫ বছর বয়সে তার টাইফয়েড হয়। সেই রোগ থেকেই দুটি পা বিকল হয়ে গেছে। এরপর থেকে কোনো কাজ করতে না পারায় ভিক্ষায় নেমেছে জসিম। ১১০০ টাকায় ভাড়া করা একটি ঘরে থাকে জসিমের পরিবার।

জসিম জানালেন, প্রতিবন্ধী হয়েও কোনো ভাতা পান না তিনি। সরকারি কোনো সাহায্যও তার পরিবারের কেউ পায় না।

এ বিষয়ে চাঁদিনীঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখলাই মিয়া জাগো নিউজকে জানান, এরা ভাসমান ভিক্ষুক। উনার জানা মতে চাঁদনীঘাট ইউনিয়নে মাত্র দুইজন ভিক্ষুক আছে। তবুও খোঁজ নেবেন।

এমএএস/জেআইএম