শয়তান মানুষের সত্যের পথে বাধা হয়ে তা থেকে বিরত রাখে এবং সবসময় মানুষকে অন্যায় কাজে উৎসাহিত করতে এভাবে প্ররোচনা দেয় যে, তুমি সত্যের ওপর আছো। তখনই মানুষ চিন্তা করতে থাকে যে, সত্যের ওপর আছে।
আর অন্যায় পথে চলা লোকদেরকে সত্যের পথে চলে মনে করে তাদের অনুসরণ করে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে এ কথা সুস্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরে বলেন, ‘শয়তানেরাই মানুষকে সৎপথ থেকে বিরত রাখে। আর মানুষ মনে করে, তারা সৎপথ প্রাপ্ত।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৩৭)
এ সব লোকেরা মূলত আল্লাহ তাআলার স্মরণ সম্পর্কে থাকে উদাসিন। ইসলামের বিধি-বিধান পালনেও থাকে গাফেল। বিতাড়িত শয়তানের মূল মিশনই হলো মানুষকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখা। যখনই কোনো মানুষ আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে যাবে তখনই সে গোমরাহীর পথ অনুসরণ করবে।
যে মানুষ গোমরাহ হয়ে যায়; সে শয়তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সর্বদা প্রস্তুত থাকে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে উল্লেখ করেন-
‘যে ব্যক্তি পরম দয়াময় আল্লাহর স্মরণে উদাসিন হয়; তিনি তার জন্য নিয়োজিত করেন এক শয়তান; অতঃপর সে হয় তার সহচর।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৩৬)
যারা নামাজ, রোজা , হজ, যাকাতসহ ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান পালনে উদাসিন হয়; তাদেরকে আক্রমণ করে বসে শয়তান। অথবা ওই সব লোক যারা নিজেরাও নামাজ পড়ে না এবং অন্যকেও পড়তে দেয় না। এভাবে মানুষ শয়তানের সহচরে পরিণত হয়।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে নামাজ, রোজা হজ যাকাত তথা ইসলামের যাবতীয় বিধান পালনে উদাসিনতা পরিহারে সতর্ক বার্তা ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-‘ওয়াইল দোজখ ওই সব নামাজিদের জন্য যারা সময়মতো নামাজ পড়ায় উদাসিন।’ (সুরা মাউন : ৪ ও ৫)
আরও পড়ুন > যে ৩ ব্যক্তি কেয়ামতের দিন বিশেষ নেয়ামত লাভ করবে
আল্লাহর স্মরণ তথা জিকির-আজকার, হুকুম-আহকাম পালনে উদাসিন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ যারাই আল্লাহর জিকিরে উদাসিন হবে; কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য শয়তান নিয়োজিত করবেন। আর তারাও হয়ে যাবে শয়তানের সহচর।
শয়তানের সহচর থেকে মুক্ত হওয়ার উপায়শয়তানের সহচর থেকে মুক্ত থাকার একমাত্র উপায় হলো বেশি বেশি আল্লাহ তাআলা জিকির করা। অলসতা না করে সময় মতো নামাজ আদায় করা। বেশি বেশি আল্লাহর রহমত কামনা করা।
বিশেষ করে-> তাউজ তথা اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْم (আউজু বিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাজিম) পড়া।> (لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم) (লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম) বেশি বেশি পড়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি জিকির-আজকার, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাতসহ যাবতীয় ইসলামি বিধি-বিধান পালনের মাধ্যমে শয়তানের যাবতীয় প্ররোচনা ও প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস