আন্তর্জাতিক

যে কারণে স্বামীকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করলেন নাদিয়া

রান্না প্রতিযোগিতা ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ’ বিজয়ী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নাদিয়া হুসেইন। তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। তবে দ্বিতীয়বার তিনি যাকে বিয়ে করেছেন তিনি আর কেউ নন, নাদিয়ারই স্বামী আবদাল হুসেইন। কয়েক বছর আগে নাদিয়া এবং আবদালের বিয়ে হয়েছিল অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের (পারিবারিক পছন্দে আয়োজিত) মাধ্যমে।

স্বামীকে বিয়ে প্রসঙ্গে ইনস্টাগ্রামে নাদিয়া লিখেছেন, এটা অভিনব কিছুই না, শুধুই ভালোবাসা। কোনো বাহুল্য নয়। কেবলই আমরা। এটা আমরা আবারও করলাম। আমি ভালোবাসি, সবসময় এভাবেই ভালোবাসব।

তিন সন্তানের মা নাদিয়া বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবিও পোস্ট করেছেন। ওয়েডিং কেক এবং হাতের আংটির ছবিও দিয়েছেন তিনি। এই টেলিভিশন উপস্থাপক প্রথমবার যখন বাবা-মায়ের পছন্দে বিয়ে করেছিলেন তখন তার বয়স মাত্র ১৯ বছর এবং বিয়ের আগে কেবল একবারই তার হবু স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছিলেন।

একই টুইটে নাদিয়ার স্বামী আবদাল হুসেইন তার স্ত্রীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, তুমি এখন আমার কাছ থেকে পালাতে পারবে না। আমি তোমাকে সীমাহীন ভালোবাসি এবং তা শারীরিক সম্পর্ককে ছাড়িয়ে।

গতবছর গুড হাউজকিপিং ম্যাগাজিনকে নাদিয়া বলেছিলেন, একজন সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা মানুষকে বিয়ে করা ছিল কঠিন। আমাকে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ করতে হয়েছিল, শিখতে হয়েছিল যে ধৈর্যের সঙ্গে সেটা চালিয়ে যেতে হবে এবং মনে রাখতে হবে আমরা সবাই মানুষ এবং সবারই ভুল-ত্রটি আছে।

নাদিয়া বলেন, ‘ভালো এবং মন্দ দুটোকে নিয়ে বসবাস করতে হয়।’ তার মতে, যখন একজনের জন্য অপরের মনে ভালোবাসা জন্ম নেয় তখন সেটা অদ্ভুতভাবে ধরা দেয়। তিনি বলেন, ‘ভালোবাসা অদ্ভুত...আপনার ওপর ভর করে শিহরিত এবং আপনার চেহারায় তার আভা ফুটে উঠবে।’

নাদিয়া যখন স্বামী আবদালকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ১৯

অপরিচিত একজন মানুষের সঙ্গে বিয়ের পর দুটো সন্তান জন্ম দেয়ার পরে, স্বামীর প্রতি প্রেম অনুভব করেছিলেন নাদিয়া। অকপটে সে কথাও বলেছিলেন তিনি, আমি আমার স্বামীকে জানতাম না এবং তারপর আমাদের দুটি বাচ্চা হলো এবং তারপরে আমি তার প্রেমে পড়লাম।

এই দম্পতির দুই ছেলে মুসা ও দাউদ, এবং এক কন্যা মারিয়াম। মিসেস হুসেইন বলেন, তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে তার ছেলে-মেয়েদের জন্য তাকে অন্তত বর বা বউ খুঁজে দেয়া প্রয়োজন হবে না।

রান্নাবিষয়ক ব্রিটেনের জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ’ প্রতিযোগিতা। ওই প্রতিযোগিতায় ২০১৫ সালে চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হন নাদিয়া হুসেইন। তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানের বড় একটি কেক তৈরি করেন এবং সেটিকে নিজের বিয়ের গহনা দিয়ে সাজান। টেলিভিশনে ফাইনালে পর্বটি দেখেন প্রায় দেড় কোটি দর্শক। এই পর্বটি এখন পর্যন্ত এ বছরের সবচেয়ে বেশি দেখা টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি।

লুটনে জন্ম নেয়া নাদিয়া তখনকার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনেরও পছন্দের প্রার্থী ছিলেন সেসময়। পরের বছর রানি এলিজাবেথের নব্বইতম জন্মবার্ষিকীর কেক তৈরি করে মিডিয়ার নজর কাড়েন নাদিয়া হুসেইন। খ্যাতনামা একটি ব্রিটিশ পত্রিকা তাকে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ৫০০ ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ’ বিজয়ী হওয়ার পর তিনি ‘নাদিয়া’স ব্রিটিশ ফুড অ্যাডভেঞ্চার’সহ অন্যান্য টেলিভিশন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। বিবিসি বাংলা

এসআর/এমএস