মতামত

ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব : ওয়াসা কোথায়?

গ্রীষ্মের দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। এরই মধ্যে নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন। বিশেষ করে ডায়রিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ১৪ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত শুধু আইসিডিডিআর, বি হাসপাতালে দশ হাজার ২৬১ রোগী ভর্তি হয়েছেন।

অবস্থা এমন হয়েছে যে, রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) বা কলেরা হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই মিলছে না। ডায়রিয়ার সুচিকিৎসায় কলেরা হাসপাতাল নামে সুপরিচিত এ হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে আটশ থেকে নয়শর বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

স্বাভাবিক সময়ে গড়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিনশ রোগী ভর্তি হয়। তবে এখন স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আগে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিনশ রোগী ভর্তি হলেও বর্তমানে নয়শর বেশি ভর্তি হচ্ছেন। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত দূষিত পানি পান ও খাবার খাওয়ার ফলে পানিবাহিত এ রোগটি হচ্ছে। জীবিকার সন্ধানে ব্যবসায়ী, দিনমজুর ও রিকশাচালকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। অত্যাধিক গরমের কারণে মানুষ প্রচুর পরিমাণে ঘামছে। গরমে স্বস্তি পেতে রাস্তার ধারে বরফমিশ্রিত বিভিন্ন ধরনের শরবত ও ফলমূল (আখ, লেবু, বেল, আনারস, আম ইত্যাদি) খাচ্ছেন। দূষিত পানির শরবত ও খোলা পরিবেশে ধুলাবালি মিশ্রিত ফলমূল খেয়ে ডায়রিয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া জরুরি।

গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে বেশি বেশি পানি পান করার কথা বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিশুদ্ধ পানিরও সংকট। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য রাস্তার ধারের দোকান থেকে যে পানি বা শরবত পান করছে তা বিশুদ্ধ নয়। এ কারণে রোগ সারার বদলে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই অস্বাস্থ্যকর শরবত বিক্রি বন্ধ করতে হবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে করতে হবে বিশুদ্ধ পানির সংস্থান। ওয়াসাকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। ওয়াসার পানি নিয়েও নানা কথা আছে। এ ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সহজলভ্য করতে হবে স্যালাইন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা যেন চিকিৎসা পায় নিশ্চিত করতে হবে সেটিও।

এইচআর/জেআইএম