বাস মালিক ও শ্রমিকদের দ্বন্দ্বে মেহেরপুরে তৃতীয় দিনের মতো আন্তঃজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের কোনো রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ গোলাম রসুল বলেন, শ্রমিকদের কোনো অন্যায় দাবি মেনে নেয়া হবে না। তারপরও তারা মালিকদের সঙ্গে বসলে যে সিদ্ধান্ত হবে সেটি লিখিতভাবে দিতে হবে। তারপর বাস চলাচল শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের যে দাবি তা আগেই মানা হয়েছিল। পরবর্তীতে শ্রমিকরাই তা পরিবর্তন করেছে। মালিকদের সঙ্গে না বসেই তারা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বলে দাবি করেন মালিক সমিতির এই নেতা।
দুই জেলার বাস মালিকদের মধ্যে সমন্বয় এবং বাসের সংখ্যা বেশি থাকায় সারা দেশেই এই নিয়মে বাস চলাচল করে। বসে থাকার সময় কমানোর দাবিতে আকস্মিকভাবে বৃহস্পতিবার থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় মেহেরপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা।
তিনি বলেন, শ্রমিক প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করেনি। তাদের নেতৃবৃন্দ চাইলে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। যাত্রীদের জিম্মি করে এভাবে দাবি আদায় করা যাবে না। শ্রমিকরা বাস না চালালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আভাস দেন মালিক পক্ষ।
অপরদিকে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, বর্তমান নিয়মে শ্রমিকদের ৩৬ দিন গাড়ি চালিয়ে ৪৬ দিন বসে থাকতে হয়। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এ কারণে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে দু’বার বাস চলাচলের পরিবর্তে একবার চালানোর দাবি শ্রমিকদের। এটি তাদের যৌক্তিক দাবি বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে মালিক-শ্রমিকদের এই দ্বন্দ্বে বিপাকে পড়েছেন এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। বিশেষ করে কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে যাওয়া লোকজনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা অবৈধ যানবাহন আলগামন, করিমন ও নছিমনসহ মোটর সাইকেলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে বাড়ছে ব্যয় ও জীবনের ঝুঁকি।
উল্লেখ্য, বাস মালিক ও শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ১১ জুলাই থেকে মেহেরপুরের সব আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আসিফ ইকবাল/এমএমজেড/জেআইএম