সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ‘দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে মিথ্যাচার ও গুম-খুনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সঠিত তথ্য না দেয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের শপথ ভঙ্গ হয়েছে। তাই তার পদে থাকার অধিকার নেই বলে।’
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।
ব্যারিস্টার খোকন বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের কনভেনশনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে মিথ্যাচার ও গুম-খুনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সঠিত তথ্য না দেয়ার কারণে তার স্বপদে থাকার অধিকার নেই।’
মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির সভায় যে বক্তব্য ও প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তার সঙ্গে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতির কোনো মিল নেই। তিনি অবাস্তব বক্তব্য দিয়েছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিথ্যাচার করেছেন। আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘প্রকৃতপক্ষে কাগজে কলমে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলা থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার বইয়ে ও কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার আবেদনে বলেছেন, সরকারের পক্ষে সরকারের কথায় ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় না দেয়ায় তাকে জোরপূর্বক অসুস্থ বানিয়ে দেশ ত্যাগ ও প্রধান বিচারপতির আসন থেকে পদত্যাগে রাষ্ট্রযন্ত্র বাধ্য করেছে। এ ছাড়াও বিচারকরা যেন সরকারের কথায় রায় দেয় এরই উদ্দেশে বিচারকদের মনে ভীতি সঞ্চারের অভিপ্রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে।’
‘যে দেশের একজন প্রধান বিচারপতি ন্যায় বিচার পান না সে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কতটুকু প্রশ্নবিদ্ধ তা দেশের মানুষের জানা আছে,’ যোগ করেন ব্যারিস্টার খোকন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রসঙ্গে বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘পুলিশ বিভাগ সরকারের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করছে। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত মর্মে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। তাই জেনেভায় দেয়া আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যের অপলাপ এবং শপথ ভঙ্গের শামিল। তাই তার (আইনমন্ত্রী) পদে থাকার আর কোনো অধিকার নেই।’
এফএইচ/এনডিএস/জেআইএম