সাহিত্য

ভাষাসৈনিক মা

নাজনীন তৌহিদ

মা! কেমন আছো? কোথায় আছো?তুমি কি দেখতে পাও আমাদের, শুনতে কি পাও এই আনন্দ উল্লাস? জানি মা তুমি খুব ভালো আছো! ভালো মানুষেরা তো ওই জগতে অনেক ভালো থাকে!এই দেখো এখন তোমার জন্য আমি একটুও আর কাঁদি না আমার চোখের কোণা বেয়ে যেটুকু জল আজ এই পবিত্র মাটিতে গড়িয়ে পড়ছে তা মোটেও কষ্টের নয়! আমার চোখে আজ আনন্দের বান ডেকেছে আমার মনে আজ খুশির জোয়ার!

যে ভাষার জন্য তোমারা মৃত্যুকে পরোয়া করোনি যে ভাষার জন্য শহীদেরা বুকের রক্ত দিয়েএ মাটিকে করেছে পবিত্র আমি সেখানে দাঁড়িয়ে আজ তোমার ভাষায় কথা বলি।আমি চিৎকার করে আজ গগন প্রকম্পিত করে ‘মা’ বলে ডাকি ভীষণ জয়োল্লাসে!

শকুন হায়েনাদের বুলেট তোমাদের টলাতে পারেনিতাদের রক্তচক্ষু শব্দহীন করে সেদিন দমাতে পারেনি।সাথীহারা, স্বজনহারা, সর্বহারা জননী তুমি হওনি পিছপা সেদিন।‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’! ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’!স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করেছো শত্রুর ভিত।দিয়েছো ভাষা, করেছো স্বাধীনচিৎকার করে বলি তাই মোরা নই কারো অধীন।

আমি সেই মহীয়সী, সেই মায়ের গর্বিত সন্তান! যার হাতে চুড়ি, কোমরে বাঁধা শাড়িতব হাতে বেজে ওঠে রণ ঝংকরিঅন্যায়ের বিরুদ্ধে যে ছিল সোচ্চারি।

বিয়ের শাড়ি খুলে রেখে, হাতের মেহেদি বানিয়েছো সহযোদ্ধার রক্তে। রফিকের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে সহযাত্রীদের সাথে ছিলে বলীয়ানহে ভাষাসৈনিক মা আমার, সালাম তোমায়তোমরাই করেছো দেশকে মহান।বিশ্বের বুকে ভাষাকে দিয়েছো সম্মান।

সালাম, জব্বার, বরকত, রফিক, শফিক যাদের রক্তে ভেজা আমার এই মাটিনাম জানা, অজানা মা, বোন, ভাই যারা করেছো খাঁটিএই আমার ভূতলশ্রদ্ধায় নত আমি, চুমি তোমাদের পদতল।

এসইউ/জেআইএম