ইসলামে শহিদের মর্যাদা অনেক বেশি। ইসলামি শরিয়তের একটি পরিভাষা এটি। ‘শহিদ’ কোনো সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিভাষা নয়। শহিদের মর্যাদা পাওয়ার জন্য প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে মুসলিম হতে হবে। বিশ্বনবীর ভাষায় শহিদর অনেক প্রকার আছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় মারা গেলেও কি শহিদ?
হ্যাঁ, কিছু কিছু দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিও শহিদ হিসেবে গণ্য। হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেসব তুলে ধরেছেন। নবিজির ভাষায় যারা শহিদ তারা হলেন-
হজরত জাবের বিন আতিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও সাত প্রকার শহিদ রয়েছে। তারা হলো-
১. মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী।
২. পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি।
৩. শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত শহিদ।
৪. পেটের রোগে মৃত্যুবরণকারী।
৫. আগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী।
৬. যে ব্যক্তি ধ্বংসস্তুপের নিচে পড়ে মারা যায়। হতে পারে তা পাহাড় ধ্বস, ভূমিধ্বস কিংবা খনিধ্বস।
৭. প্রসবকালীন সময়ে মৃত্যুবরণকারী নারী। (মুয়াত্তা মালিক)
হাদিসের উল্লেখিত প্রতিটি প্রকারিই দুর্ঘটনা। তাই এসব দুর্ঘটনায় যারা মারা যাবেন; তারা যদি ঈমানদার হন তবে তারা শহিদ।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য হাদিসে আরো বলেন-
১. যে ব্যক্তি তার দ্বীনের (ইসলাম) জন্য নিহত হয়।
২. যে ব্যক্তি তার জীবন রক্ষার্থে নিহত হয়।
৩. যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয়।
৪. যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষার্থে নিহত হয়, সেও শহিদ। (মুসলিম, মিশকাত)
হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদে এসেছে, যে ব্যক্তি অত্যাচারের স্বীকার হয়ে (মজলুম অবস্থায়) নিহত হয়, সেও শহিদ।’
উল্লেখ্য, ওইসব মুমিন ব্যক্তি আখেরাতে শহিদের নেকি ও মর্যাদা পাবেন। যদিও দুনিয়াতে তাদের গোসল ও জানাজা হবে।
শহিদের শ্রেণি বিভাগ
১. যারা দুনিয়া ও আখেরাতে শহীদ। তাঁরা হলেন- কাফিরদের সঙ্গে যুদ্ধে নিহত মুমিন ব্যক্তি;
২. আখেরাতে শহিদ। তারা হলো উপরে বর্ণিত অন্যান্য শহীদগণ;
৩. দুনিয়াতে শহিদ, আখিরাতে নয়। তারা হলো- যুদ্ধের ময়দানে গণীমতের মাল আত্মসাৎকারী অথবা জিহাদ থেকে পলাতক অবস্থায় নিহত ব্যক্তি।’ (ফিক্বহুস সুন্নাহ)
এমএমএস/জিকেএস